আজ দুর্গাপূজার শুভ মহালয়া

0

সুন্দর সাহা॥ প্রাচীন রীতি ও নিয়ম মেনে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে শুভ মহালয়া। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু। মায়ের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই দিনকয়েক আগে থেকেই দুর্গাা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আজ মহালয়ার মাধ্যমে মায়ের চক্ষুদান হবে। যেহেতু এবার মলোমাস পড়ছে, তাই চক্ষুদানের পর থেকে প্রতিমার সামনে পর্দা টাঙানো থাকবে। মলোমাস শেষ হলে পর্দা সরিয়ে মায়ের অঙ্গসজ্জা, বস্ত্র, অলঙ্কার পরিধান করানো হবে। আজ মহালয়ায় দেবীপক্ষের শুরু। সেই সঙ্গে আজ থেকে শুরু হ”েছ দুর্গাপূজার ক্ষণ গণনা। মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেবীর আরাধনা সূচিত হয় মহালয়ার মাধ্যমে। চন্ডীপাঠ, মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে ভক্তকুল আজ মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানাবে দেবী দুর্গাকে। এবার মলোমাস পড়ায় ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে ২১ অক্টোবর দেবীর বোধনের মাধ্যমে।
পুরাণে আছে, দুর্গোৎসবের তিন পর্ব যথা : মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহালয়ায় পিতৃপক্ষ সাঙ্গ করে দেবীপক্ষের দিকে যাত্রা শুরু হয়। সনাতন ধর্মে বলা হয় পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসেন। মৃত আত্মীয়-পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন অনেকে। পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশে জল-তিল-অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করা হয়। এরপর শুরু হয় দেবীপক্ষের। এই দেবীপক্ষকে বলা হয় সবচেয়ে শুভদিন। এ সময় সব ধরনের শুভ কাজ সম্পন্ন করা যায়। পুরাণে আছে- অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন। চারদিকে অশুভের প্রতাপ। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হলেন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। পুরাণমতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি এই পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে শ্রী রামচন্দ্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়। ধর্মমতে, এই দিনে দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। মহালয়ার দিন ভোরে মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়। কেশবপুর উপজেলার সর্ববৃহত সাহাপাড়া হরিতলা সার্ব্বজনীন সম্প্রীতি মন্দিরের পুরোহিত ডাঃ কমল কৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, কৃষ্ণাষ্টমীতে রীতি মেনে দেবী দুর্গার গৃহারম্ভের বিশেষপুজো হয়েছে। মহালয়ায় মায়ের চক্ষুদান হবে। মলোমাস শেষ হলে মাকে বস্ত্র, অলঙ্কারে সজানো হবে। আগামী ২১ অক্টোবর বোধনের মাধ্যমে শুরু দেবীর আরাধনা।