লোহাগড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সম্মানিভাতার টাকা আত্মসাত,বোনের মামলায় ভাই কারাগারে

0

শিমুল হাসান, লোহাগড়া (নড়াইল) ॥ নড়াইলের লোহাগড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সম্মানিভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কারাবাস করছেন প্রতারক মসিয়ার রহমান। আপন ভাইয়ের মুক্তিযোদ্ধা সম্মানিভাতার টাকা এককভাবে আত্মসাতের অভিযোগে আপন বোনের দায়ের করা মামলায় তার এই কারাবাস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দিঘলিয়া ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামের আব্দুর রশিদ শেখের ছেলে মোশোরেফ হোসেন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হন। মৃত্যুর পরে সরকার মো. মোশোরেফ হোসেনের নামে রাষ্ট্রীয় সম্মানিভাতা বরাদ্দ দেয়। মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং-২০৭২, মুক্তিবার্তা (লাল বই) নম্বর-০৪০৭০২০৪১৪। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্তান না থাকায় ওই সম্মানিভাতা শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পিতা আব্দুর রশিদ শেখ নিজেই উত্তোলন করতেন। আব্দুর রশিদ শেখের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী (শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মা) মোসা. সখিনা খাতুনের নামে ওই ভাতা চালু হয়। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট সখিনা খাতুনের মৃত্যুর পর তার বিধবা বড় মেয়ে (শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বোন) বেবী খাতুন ভাতার টাকা পেয়ে আসছিলেন এবং উত্তরাধিকারদের মধ্যে সমবন্টন করছিলেন। পরবর্তীতে সরকার প্রজন্মভাতা ঘোষণা দিলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ভাই (আব্দুর রশিদ শেখের ছেলে) মসিয়ার রহমান শেখ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তথ্য গোপন করে নিজ বড় বোন বেবী খাতুনের নাম বাদ দিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নিজের নামে ওই সম্মানিভাতা করে নেন। মসিয়ার শেখ একাধিক উত্তরাধিকার থাকা সত্বেও একাই ভাতার টাকা উত্তোলন করে ভোগ করছিলেন। উত্তরাধিকার আব্দুর রশিদ শেখের সন্তান ভাতাবঞ্চিত বেবী খাতুন, সুফিয়া বেগম, লিলি রহমান, নাসিমা বেগম, জেসমিন বেগম, আব্দুর শুকুর, শেখ সাহিদুর রহমান তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে গত বছর সংবাদ সম্মেলন করেন। পরবর্তীতে ওই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বোন বেবী খাতুন ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে গত বছরের ২৫ নভেম্বর নড়াইল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত ওই মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে প্রদান করেন। পিআইবি দীর্ঘ তদন্তের পর গত ৭ সেপ্টেম্বর (চলতি বছর) আদালতে অভিযুক্ত মসিয়ারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে মসিয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. শেখ আররাফ হোসেন জানান, গত মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অভিযুক্ত মসিয়ার রহমান নড়াইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক মো. মোর্শেদুল আলম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।