পেঁয়াজ নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত ‘রক্তের বন্ধনের’ প্রতিফলন হয় না: আসম রব

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাংলাদেশকে বিন্দুমাত্র অবহিত না করে ভারত পিয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রদান করায় ভারতের সাথে বাংলাদেশের সরকার ঘোষিত ‘রক্তের বন্ধনের’ পররাষ্ট্র নীতির প্রতিফলন হয় না-বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, বাংলাদেশ পিয়াজ আমদানির ৯০ শতাংশ ভারত থেকে আমদানি করে থাকে। গতবছর সেপ্টেম্বরেও ভারত হঠাৎ করে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশকে অনেক জরিমানা দিতে হয়েছে এবং জনগণকে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। এবারো আবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার প্রসঙ্গে গত বছরের ৪ঠা অক্টোবর নয়াদিল্লিতে বলেছিলেন ভারত হুট করে রপ্তানি বন্ধ করে দিল। আমরা পড়ে গেলাম বেজায় অসুবিধায়। একটু বলে কয়ে সিদ্ধান্ত নিলে আমরা বিকল্প খোঁজার সময় পেতাম। আপনাদের অনুরোধ, ভবিষ্যতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে আমাদের একটু আগে থেকে জানাবেন। শুধুমাত্র পিয়াজের মতো একটা বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ কে উপেক্ষা করা দু’ দেশের সম্পর্কের আকাশছোঁয়া উচ্চতা, ‘ভিন্ন মাত্রা’, ‘চিরকাল অপরিবর্তিত’, ‘রক্তের বন্ধন’, ‘রাখি বন্ধন’ কোনটারই প্রতি ফলন হয় না।
স্বাধীন দেশের সরকার বা রাজনীতিবিদরা দু’ দেশের সম্পর্ক নিয়ে যখন মন্তব্য করেন সেগুলো কি জাতির আত্মমর্যাদা কে ক্ষুণ্ন করে কিনা, আন্তর্জাতিক কূটনীতির প্রতিনিধিত্ব করে কিনা, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উচ্চতম অবস্থানকে নিশ্চিত করে কিনা তা আমরা কেউ বিবেচনায় রাখছি না । দু’দেশের সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থ দিয়ে নির্ধারিত হয়। ব্যক্তিগত আবেগ বা দায় থেকে নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন প্রশ্নে বলা হয়েছে, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইনের ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতি সমূহের প্রতি শ্রদ্ধা এ সকল নীতি হবে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি । কিন্তু আমরা সাময়িক ক্ষমতার মোহে সাংবিধানিক নির্দেশনাকে অস্বীকার করে জাতির আত্মমর্যাদা কে ক্রমাগত বিনষ্ট করে দিচ্ছি। দু’দেশের সম্পর্কের প্রশ্নে আমরা অতি অতিমাত্রায় নাটকীয় বক্তব্য প্রদান করি যা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম বা আত্মদানের প্রতিনিধিত্ব করে না। এসব বিষয়ে আমাদের গভীর পর্যালোচনা দরকার।