৪৯ বছরেও বাংলাদেশে গণতন্ত্র দৃঢ় ভিত্তি পায়নি : ন্যাপ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতার অবস্থা নিয়ে গুরুতর সব প্রশ্ন উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। তারা বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার অন্যতম ভিত্তি বলে বিবেচিত এই বিষয়গুলো এত বছর পরও কেন বাংলাদেশে নিশ্চিত করা যায়নি এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার এত সময় পরও বাংলাদেশে গণতন্ত্র দৃঢ় ভিত্তি পায়নি।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন। তারা বলেন, গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাও মসৃণ হয়নি। গণতন্ত্র সংহতকরণ তো করতে পারেইনি বরং বাংলাদেশ গণতন্ত্রের মৌলিক ভিতগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ প্রায়ই গণতান্ত্রিক পথ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে এবং তখন আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো দেশটিকে গণতান্ত্রিক বলে চিহ্নিত করতে সম্মত হচ্ছে না। নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিকাশ যেভাবে হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। আজ যে গণতন্ত্র আমাদের দেশে স্থান করে নিয়েছে তাকে উদারনীতিবিহীন গণতন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে অনেকে দাবি করেন যে গণতন্ত্রের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পূর্বশর্তগুলো আমাদের দেশে পূরণ না করেই আমরা গণতন্ত্র নিয়ে ভেবেছি। আর সে কারণে এখানে গণতন্ত্রের উপযুক্ত ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। ন্যাপ চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উদার মনোভাব দেখায় না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি তাদের প্রত্যেকের রয়েছে প্রচণ্ড ঘৃণা। তারা সংকীর্ণ মনের, স্পর্শকাতর, ক্ষমতালোভী, অন্যের কল্যাণ পছন্দ করে না। রাষ্ট্রচিন্তকদের ভাষায় যাকে বলে, ‘আত্মঘাতী’। বিরোধী দলও তাদের ভূমিকায় রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ধরে নেয়। সমঝোতার দরজা বন্ধ করে দেয়।
তারা আরও বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। রাজনৈতিকভাবে দ্বিধাবিভক্ত এবং সে কারণে ঐক্যহীন হয়ে রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেশে ঐক্যবদ্ধ কোনো রাজনৈতিক সমাজ গড়ে তুলতে পারেনি। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কখনো কোনো চেষ্টা করেছেন বা উদ্যোগ নিয়েছেন এমনটাও পরিলক্ষিত হয়নি। বরং শাসকদল সবসময় বিরোধী দল, পক্ষকে বিনাশ ও নির্মূল করতে চেয়েছে এবং এমন চেষ্টা এখন অনেক বেশি প্রবল ও জোরালো হয়েছে। তারা বলেন, ঐতিহাসিক সত্য উচ্চারণ ‘কোনো শাসকই স্থায়ী হতে পারে না শাসিতদের সন্তুষ্টি ছাড়া’ এ বিষয়টি আমাদের শাসক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মনোজগতে এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই নেই। আর নেই বলেই গণতন্ত্র দৃঢ় ভিত্তি নিয়ে কখনই দাঁড়াতে পারেনি।