শিরোমণি কেবল শিল্পে শ্রমিক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

0

ফুলবাড়ীগেট (খুলনা) সংবাদদাতা ॥ খুলনার শিরোমণি শিল্পাঞ্চলের বাংলাদেশ কেবল শিল্প লিমিটেডে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোন প্রক্রিয়া ছাড়াই ১০টি শ্রমিক পদের ৬টিতে সিবিএ নেতাদের ছেলে ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নিয়মবহির্ভূতভাবে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশেরই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করার মত শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, শিরোমণি কেবল শিল্প লিমিটেড ‘কাজ আছে মজুরি আছে, কাজ নাই মজুরি নাই’ পদ্ধতিতে উৎপাদন বিভাগে মেশিন চালনার জন্য দৈনিক মজুরিভিত্তিক ১০ জন শ্রমিক নিয়োগের জন্য গত ২৬ আগস্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কমপক্ষে এসএসসি/ভোকেশনাল/সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন এবং যাদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ১০টি পদের বিপরীতে ২৫৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর (শুক্র ও শনিবার) অত্যন্ত গোপনে সিবিএ নেতার ছেলে, তাদের আত্মীয় স্বজনসহ ৬ জনকে কাজে নিয়োগ দেন। যাদেরকে কাজে নেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেরই আবেদন করার মত যোগ্যতা না থাকায় তারা আবেদন পর্যন্ত করেননি। কেবল শিল্প লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) স্বাক্ষরিত ডিউটি শিটে দেখা যায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর ফ্যাক্টরির ডাকট মেশিনে ডিএল ক শিফটে মো. মুরাদ নামের এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যিনি সিবিএ নেতা মো. বিল্লালের ভগ্নিপতি। এছাড়া সিবিএ নেতা শাহ নেওয়াজের আত্মীয় সালাম ডিএল-খ শিফট, সিবিএ সভাপতির আশীর্বাদপুষ্ট উৎপাদন বিভাগের কর্মচারী মিজানুর রহমানের ছেলে আজিজুলকে ডিএল গ শিফট কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরদিন ১২ সেপ্টেম্বর এক্সট্রাডার মেশিনে ডিএল গ শিফটে সিবিএ নেতা খলিলুর রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম, ডিএল খ শিফটে সিবিএ নেতা মিজানুর রহমান মিলনের ভায়রার ছেলে হাফিজুর রহমান এবং সিবিএ’র এক নেতার সুপারিশে মো. তানভীরকে ডিএল ক শিফটে কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১০টি পদে শ্রমিক নিয়োগের কথা থাকলেও কোন প্রকার নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই নিয়মবহির্ভূতভাবে সিবিএ নেতাদের ৬ জনকে কাজে নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাদের অনেকের আবেদন করার মত শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা না থাকায় আবেদন পর্যন্ত করতে পারেননি। অথচ ফ্যাক্টরির একজন কর্মচারী বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন কর্মস্থলে অসুস্থ হয়ে পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার একমাত্র সন্তান ডিপ্লোমা পাশ করে ফ্যাক্টরির সিবিএ এবং কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চাকুরির জন্য ধর্ণা দিয়েও কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে কেবল শিল্প লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. মোসলেম উদ্দীন বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি, কাজ প্রসেসিংয়ে আছে। গত কয়েক মাস আগে কয়েকজনকে ড্রাম শপে ডেইলি লেবার হিসেবে নেয়া হয়েছিল। তাদের কয়েকজনকে আপাতত ডাকট মেশিনের হেলপার হিসেবে কাজ করানো হচ্ছে। মেশিন চালনার কাজে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, সেই নিয়োগের সাথে এদের কোন সম্পর্ক নেই। ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জগদিস চন্দ্র মন্ডল বলেন, অনেকে আবেদন করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, বিজ্ঞপ্তির এগেনেস্টে কাউকে নিয়োগ দেয় হয়নি। তবে চার মাস আগে ৮ জনকে ড্রাম শপে লেবার হিসেবে নেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, বিজ্ঞপ্তির ১০ জন নিয়োগের সাথে এদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।