‘সরকারের টাকা তো কোলের মধ্যে রেখে দিই না’

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ করোনা মহামারিতে দেশে ফেরত প্রবাসীদের বিদেশে যেতে বা দেশে স্বাবলম্বী হতে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। কিন্তু ঝিনাইদহে এর ব্যতিক্রম। জেলায় ঋণ সুবিধা চালু থাকলেও কর্মকর্তারা প্রবাসীদের বলছেন ঋণ দেয়া বন্ধ আছে। দিনের পর দিন ব্যাংকের শাখায় ঘুরতে হচ্ছে অসহায় প্রবাসীদের। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা প্রবাসীদের এ সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।
সরেজমিনে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখায় গিয়ে ঋণ আবেদন করতে আসা প্রবাসীদের সঙ্গে কথা হয়। এ সময় সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের দুবাই প্রবাসী পলাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, করোনার কারণে দুবাই থেকে দেশে এসেছি। এখন যেতে পারছি না। ভেবেছিলাম প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়িতে খামার করব। গত ১ মাস ধরে এখানে ঘুরছি। ঋণ চালু নেই বলে দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আজ এসেছি ব্যাংকের কর্মকর্তারা বললেন এখনও ঋণ দেয়া চালু হয়নি, আগামী সপ্তাহে আসেন। সদরের বেতাই গ্রাম থেকে আসা ইউনুস নামে এক প্রবাসী বলেন, মাসের পর মাস ঘোরাচ্ছেন। বলছে ঋণ চালু নেই। ওরা শুধু বলে সামনের সপ্তাহে। আজ বলছেন, অফিসার নেই, চালু হয়নি। সামনের সপ্তাহে আসেন। ঋণ আবেদন করতে আসা সবাইকে এভাবে ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাডাঙ্গা গ্রাম থেকে আসা মালেশিয়া প্রবাসী রাজু হুসাইন বলেন, এখন আবার বিদেশে যেতে চাচ্ছি। বিমানের টিকিট কেনার টাকা নেই। গত ২ মাস ধরে ব্যাংকে আসছি। ব্যাংকে এলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন ঋণ দেয়া বন্ধ আছে। ঋণ চালু হলে আপনাদের জানানো হবে। শৈলকুপা থেকে আসা এক প্রবাসী বলেন, এর আগে এসেছিলাম তখন তারা বলেছিলেন এ মাস থেকে নাকি লোন দেয়া শুরু হবে। এখন পর্যন্ত আমরা লোন পাইনি। এমনকি আবেদন করতে কী কাগজ লাগবে তাও বলছেন না। আজ না কাল বলে ঘোরাচ্ছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার মান্দারবাড়িয়া গ্রাম থেকে আসা প্রবাসী ওহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের সব জেলায় ঋণ সুবিধা চালু থাকলেও এই শাখায় এলে বলা হচ্ছে ঋণ বন্ধ আছে। সরকার প্রবাসীদের সহযোগিতা করতে চাচ্ছে আর এই শাখার কর্মকর্তারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন। কোনো অদৃশ্য কারণে তারা এ মিথ্যাচার করছেন। এর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তবে এসব অভিযোগের ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক শেখ সিফাতি মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা তো সরকারের টাকা কোলের মধ্যে রেখে দিই না। আবেদন করলে আমরা তা ঢাকায় পাঠাব। সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।’ প্রবাসীদের ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে ঋণ নাকি বন্ধ আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীরা ভুল বলছে। ঋণ দেয়া চালু আছে।