সাংবাদিক স্বামীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ স্ত্রীর

0

নড়াইল সংবাদদাতা॥ নড়াইল থেকে প্রকাশিত পত্রিকা দৈনিক বিডি খবর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক লিটন দত্তের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী পপি বিশ্বাস। এ সময় ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যৌতুক, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন এবং বিভিন্ন কু-কর্মের অভিযোগ আনেন তার স্ত্রী। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সিংগাড়ি গ্রামের পল্লী চিকিৎসক প্রমথ বিশ্বাসের মেয়ে পপি বিশ্বাস নড়াইল প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্যে স্বামীর যৌতুকের দাবি, বিভিন্ন অনৈতিক ও অত্যাচারের কাহিনী তুলে ধরে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। এ সময় তার ১০ বছর বয়সী ছেলে দিপ্র ও ৬ বছরের মেয়ে জয়িতা উপস্থিত ছিল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ‘২০০৭ সালে সদর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের রায়খালী গ্রামের বঙ্কিম দত্তের সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের সময় তার বাবা লিটনকে যৌতুক হিসেবে নগদ ৪ লাখ টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ প্রদান করেন। কিন্তু স্বামীর লোভ ছিল অন্তহীন। বিয়ের পর থেকেই আরও যৌতুকের দাবিতে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। যৌতুকের টাকা দিতে ব্যর্থ হলেই তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হত। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিভিন্ন সময় বাবা সমিতি থেকে লোন করে, নিজেদের জমির ফসল ও জমি বিক্রি করে এবং জমি বন্দক দিয়ে যৌতুকের অর্থ পরিশোধ করেছেন। এভাবে স্বামীকে নগদ, বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী ও শ্বশুরবাড়িতে জমি রাখতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। এতেও তার লোভ বিন্দুমাত্র কমেনি বরং বেড়ে যায়। পরবর্তীতে স্বামীর দাবিকৃত টাকা দেয়ার সামর্থ্য না থাকায় আবার নেমে আসে নির্যাতন। এ কারণে দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর দু’সন্তানসহ আমাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ৪ বছর ধরে তিনি আমার এবং দু’সন্তানের কোনো খোঁজ-খবর নেন না। আমি নিজে রক্ত বিক্রি করে তাকে টাকা দিয়েছি। বাবার এত বড় দেনা পরিশোধ করতে নড়াইলে একটি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে এবং ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতে বাধ্য হয়েছি। বাবা মানে কী আমার সন্তানরা তা জানে না। আমার স্বামীও সন্তানদের পরিচয় দিতে চান না। বর্তমানে আমার স্বামী নড়াইল শহরে এক বিবাহিতা নারীকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। গত মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে সে ও তার কয়েক সহযোগী আমাকে মারধর করে এবং ধাক্কা দিয়ে রাস্তার ওপর ফেলে দেয়। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর স্বামী তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে একটি লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। একজন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক কিভাবে এত খারাপ হতে পারে? আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।’
এদিকে লিটন দত্তের বিরুদ্ধে সদর আমলী আদালতে ২০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের ঘটনায় নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। এ মামলার আইনজীবী রাজু আহম্মেদ জানান, কয়েক মাস আগে শহরের ভওয়াখালী এলাকার নূর মোহাম্মদের কাছ থেকে লিটন দত্ত ব্যবসা করতে ১ মাসের জন্য ২০ লাখ নেন। এ সময় লিটন নূর মোহাম্মদকে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, নড়াইল শাখার ২০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। পরে নূর মোহাম্মদ ১ মাস অতিবাহিত হলে টাকা পরিশোধের জন্য চেকটি ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে উপস্থাপন করলে অপর্যাপ্ত তহবিল থাকায় চেকটি ডিজঅনার হয়। এ ঘটনায় পেপার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লিটনকে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হলেও টাকা পরিশোধ না করায় তার বিরুদ্ধে ১ সেপ্টেম্বর সদরের আমলী আদালতে চেক ডিজঅনার মামলা হয়েছে। অভিযোগে জানা গেছে, লিটন দত্ত পত্রিকাকে পূঁজি করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যবসা এবং বিভিন্ন সুযোগ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে কমপক্ষে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব অভিযোগের ব্যাপারে দৈনিক বিডি খবরের সম্পাদক ও প্রকাশক লিটন দত্তকে ফোন করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।