এসপিকে আসামি করতে সিনহার বোনের আবেদন খারিজ

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামি হিসেবে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এ বি এম মাসুদ হোসেনকে অন্তর্ভুক্তির আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এই আবেদন খারিজ করে দেন। এর আগে দুপুরে আদালতে এসপি মাসুদ হোসেনকে আসামি করার এই আবেদন করেন সিনহার বড়বোন ও সিনহা হত্যা মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে আদেশের জন্য অপেমাণ রাখেন। পরে বিকেলে আদেশ দেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, বিচারক বাদীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আদেশে বিচারক বলেন, তদন্তকালীন সময়ে কেউ যদি মামলায় প্রভাব বিস্তার করতে চান তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া মতা তদন্তকারীর আছে। দুপুরে বাদী পরে আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, ৫ আগস্ট সিনহা হত্যার ঘটনায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করেছিলাম। এখন সেই মামলায় জেলার এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য ফৌজদারি আবেদন করা হয়েছে। এতদিন পর সিনহা হত্যা মামলায় এসপিকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্তির কারণ কি ? জানতে চাইলে আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, আমরা এতদিন যাচাই বাছাই করেছি, এরপর তাঁর (এসপি) ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেই মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদন করা হয়েছে।
আবেদন দাখিলের সময় মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এসপি মাসুদ হোসেন শুরু থেকেই সিনহা হত্যা মামলার আসামিদের পরো ও প্রত্যভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। উনি (এসপি) মতার অপব্যবহার করেছেন। তাই তাঁকে ( এসপি) আসামি করার আবেদন জানানো হয়েছে। গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। এ ঘটনায় পুলিশের পে টেকনাফ মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় সিনহাকে আসামি করা হয়। পরে সিনহার বোনের করা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রতিসহ ৯ পুলিশকে আসামি করা হয়। এরপর ওসি প্রদীপসহ ৭ পুলিশ আদালতে আত্মসম্পর্ন করেন। একজন এসআই ও একজন কনস্টেবল পলাতক রয়েছেন। পরে ওসি প্রদীপসহ পুলিশের সাত সদস্যকে সিনহার বোনের করা মামলায় গ্রেপ্তার (আসামি) দেখানো হয়। বর্তমানে সিনহা হত্যা মামলায় মোট আসামি ১৩ জন। পুলিশের সাত সদস্য ছাড়াও এপিবিএনের তিন সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ এবং মারিশবুনিয়া গ্রামের তিন ব্যক্তি নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আইয়াসকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঘটনার সময় ( ৩১ জুলাই রাতে) এপিবিএনের তিন সদস্য শামলাপুর তল্লাশিচৌকির দায়িত্বে ছিলেন। আর মারিশবুনিয়ার তিন ব্যক্তি টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার সাী ছিলেন। ১৩ আসামির সবাই এখন জেলা কারাগারে অবস্থান করছেন। এরমধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ছাড়া অন্য ১২ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।