যশোরে একদিনে করোনা উপসর্গে ২ জনের মৃত্যু : আক্রান্ত আরও ২০

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গতকাল যশোরে করোনা সন্দেহে হাসপাতাল আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩০ মিনিটের ব্যবধানে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুর পর ১ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এদিন যশোরে নতুন ২০ জন কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছেন, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় ইয়াকুববার আলী মোল্লা (৭৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের পুরুষ আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তির সময় তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। ইয়াকুব মোল্লার বাড়ি বাঘারপাড়া উপজেলার বল্লামুখ ধলগ্রামে। এর ৩০ মিনিট আগে বিকেল ৪টায় নির্মল কান্তি সরকার (৫৫) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। করোনা উপসর্গ নিয়ে তাকে সকাল পৌনে ১০টায় হাসপাতাল আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। নির্মল কান্তি সরকারের বাড়ি অভয়নগর উপজেলার হরিশপুরে। মৃত্যুর পর করোনা সন্দেহে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
গতকাল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১শ’ ৮টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। এর ভেতর সকলেই আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের ১১ জনই যশোর সদরের। এছাড়া চৌগাছা, মনিরামপুর, অভয়নগর, শার্শায় ২ জন করে ৮ জন এবং কেশবপুরে আক্রান্ত হয়েছেন ১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫শ’ ৫৬ জন। মৃত্যু হয়েছে মোট ৫০ জনের। যার ভেতর যশোরে ৪২ জন এবং ঢাকা-খুলনায় ৪ জন করে ৮ জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছেন, গতকাল ল্যাব থেকে আসা রিপোর্টে হায়াম বিশ্বাস (৭১) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর শরীরে করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর শহরের পুলিশ লাইন এলাকায় নিজ বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি শুধু হায়াম বিশ্বাস নয় ৮ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার এড়েন্দা গ্রামের আব্দুল মান্নান (৬৫), ৫ সেপ্টেম্বর কেশবপুরের রামদুলাল সাহা (৮৭) মৃত্যুবরণ করেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ জন। যশোর সদরে ৩১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অভয়নগর-চৌগাছায় ৩ জন করে ৬ জন, কেশবপুর, শার্শায় ২ জন করে ৪ জন ও বাঘারপাড়ায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা ও খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৮ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২ হাজার ২শ’ ৬৪ জন সুস্থ হয়েছেন। হাসপাতালে আইসোলেশনে আছেন ২৪ জন। বাকি ১ হাজার ২শ’ ২৬ জন রয়েছেন হোম আইসোলেশনে। যশোরে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮শ’ ১০টি। রিপোর্ট এসেছে ১৩ হাজার ৯৯টি। এর ভেতর ৩ হাজার ৫শ ৫৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। জাতীয় পর্যায়ের হিসাব অনুযায়ী যশোরে আক্রান্তের হার শতকরা ২০ ভাগ এবং মৃত্যুর হার শতকরা ১ ভাগের নিচে। সে তুলনায় যশোর ভালো আছে। গতকাল একদিনে যশোর সদরে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) যশোর জেলা শাখার সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু (৫৮), বেজপাড়া এলাকায় স্বপন মল্লিক (৬২), তার মাতা চায়না মল্লিক (৭৮), ঘোপ জেল রোডের এসএম গোর্কী (৫৬), ষষ্টিতলাপাড়ার পলি দত্ত (৩৫), তার স্বামী কেশবপুর উপজেলায় কর্মরত অপূর্ব মন্ডল (৪৫), উপশহর এফ-ব্লকের রোবায়েত সুলতান (৩২), যশোর এজি অফিসের অডিটর তালবাড়ীয়ার এমএম আলমগীর (৫২), কিসমত নওয়াপাড়ার চম্পা বেগম (৩৫), শার্শার মহিষজোড়া গ্রামের শাকিল (৩৫), পুলিশ লাইনের খায়রুল (৩৩) ও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নিমাই চন্দ্র। চৌগাছা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কর্মরত ফাতেমা নবী (৪৫), শেখ রফিকুল ইসলাম (৫৫), অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বাুলেন্সচালক সুলতান আহমেদ (৫৫), গুয়াখোলার রিজিয়া বেগম (৯০), মনিরামপুরের থানাপাড়ার কৃষ্ণপদ চৌধুরী (৩৪), এড়েন্দা গ্রামের সুব্রত রঞ্জন সরকার (৪২), শার্শার বেনাপোলের আবদান হোসেন (৪০) ও রামপুরের সাগরিকা আক্তার (৩০)।