চৌগাছায় মাছ শিকারের সরঞ্জাম কিনতে ক্রেতার ভিড়,দামও বেশি

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ এ বছর ভালো বৃষ্টিপাত হওয়ায় খাল বিলে দেখা মিলছে হরেক রকমের দেশি মাছ। আর তাই মাছ শিকারের সরঞ্জাম কিনতে চৌগাছার প্রধান বাজারে মানুষের ভিড় বেশ লক্ষণীয়।সরেজমিন দেখা গেছে, সোমবার ছিল চৌগাছা উপজেলা সদরের সাপ্তাহিক হাটের দিন। উপজেলার সর্ববৃহৎ এই হাটে বাঁশ দিয়ে হাতের তৈরি হরেক রকমের মাছ শিকারের সরঞ্জাম নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। বাঁশের তৈরি বেনে, চারো, ঘুনি, পোলো, আটলে, খুল্লি, আরিন্দা, দোপেনেসহ খেপলাজাল, পাতাজাল, ঠেলাজাল ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাত অনেক বেশি হয়েছে। মৌসুমের বেশ আগে ভাগেই শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত।
সে কারণে উপজেলার প্রতিটি এলাকার খাল বিল জলাশয় পানিতে টইটুম্বুর। খাল বিলের পানিতে দেখা মিলছে হরেক রকমের দেশি মাছ। দেশি মাছের স্বাদ অন্য যে কোন মাছের তুলনায় বেশি। তাইতো এই স্বাদ নিতে মানুষ কিন্তু ভুল করছেন না। যে যেমন ভাবে পারছেন মাছ শিকারের সরঞ্জাম কিনে ফিরছেন বাড়ি। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকেই হয়েছেন বেকার। অলস সময় পার করছেন বাড়িতে বসে। ওই শ্রেণির ব্যক্তিরা খাল বিল থেকে মাছ শিকারে মেতে উঠেছেন। আর কিছু না হোক সময়টা বেশ ভাল ভাবেই পার করতে পারবেন এই নেশায় তারা বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম সংগ্রহ করছেন বলে বেশ কিছু ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে। ক্রেতার উপস্থিতি বেশি হওয়ায় বিক্রেতারা বেশি দামে সরঞ্জাম বিক্রি করছেন বলেও অনেকে অভিযোগ করেন।
উপজেলার মাড়–য়া গ্রামের মাছ শিকারের মালামাল তৈরির কারিগর মকবুল হোসেন, সবুজ হোসেন, উকিল বিশ^াস, সেলিম রেজা, ইসলাম, বাবুল আক্তার বলেন, বছরের পর বছর তারা এই ব্যবসা করে আসছেন। মূলত মাছ ধরার সরঞ্জাম বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। এ বছর বিক্রি ভালো হওয়ায় তারা বেশ খুশি। কারিগররা বলেন, একটি ভালো মানের বাঁশ থেকে কমপক্ষে ৩-৪ টি চারো বা ঘুনি তৈরি করা যায়। আর প্রতিটি চারোর দাম ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা ও ঘুনি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি তারা এই কাজে সময় পার করছেন। কিছু কিছু সময় পরিবারের অন্য সদস্যরাও কাজে বেশ সহযোগিতা করেন। তারা বলেন, বাজারে এই সব মালামালের চাহিদা বেশি থাকায় তারা মাঝে মধ্যে যশোরের মনিরামপুর, নড়াইল ও জীবননগর উপজেলার শিয়ালমারী থেকে মালামাল কিনে এনে বিক্রি করছেন। তবে নিজেদের হাতে তৈরি মালে লাভ হয় বেশি। সরঞ্জাম কিনতে আসা উপজেলার বড়খাঁনপুর গ্রামের শফিউদ্দিন বলেন, এ বছর বর্ষায় খাল বিলে যেমন পানি জমেছে, তেমনি ভাবে হরেক রকমের মাছও দেখা যাচ্ছে। তাই মাছ শিকারের জন্য চারো কিনতে এসেছি। কিন্তু দামটা অনেক বেশি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম শাহাজান সিরাজ বলেন, এ বছর খাল বিলে দেশি মাছের ব্যাপক সমারোহ ঘটেছে এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো দিক। কেননা দেশি মাছ অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। প্রতিটি খাল বিলে দেশি মাছ আমাদের সকলকেই রক্ষা করতে হবে। কোনভাবেই কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা যাবে না। এ ধরনের অভিযোগ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।