ভবদহে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে

0

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর) ॥ ‘যশোরের দুঃখ’ হিসেবে খ্যাত ভবদহ অঞ্চলে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার অভয়নগর, কেশবপুর ও মণিরামপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। খুব কষ্টে দিন পার করছেন তারা।
সরেজমিনে ভবদহ অঞ্চলের অভয়নগর উপজেলার আন্ধা, বেদভিটা, ডুমুরতলা, ডহর মশিয়াহাটি, সুন্দলী, চলিশিয়া, মশিয়াহাটি, সরখোলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গ্রামগুলোর নি¤œাঞ্চলের বাড়ির উঠানের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে মানুষ চলাচল করছেন। রান্নাবান্নার কাজ সারতে হচ্ছে ঘরের মধ্যেই। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল নিরাপদ উঁচু স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে শ’ শ’ মাছের ঘের। শিা প্রতিষ্ঠানের মাঠগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এবারের চলতি মৌসুমে স্মরণকালের ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, ২০১৬ সালের মতো এবারও তাদের বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হবে। এ বছর একটানা বৃষ্টি না হওয়ার পরও যদি এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, তাহলে টানা বৃষ্টিতে এখানকার অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। ভবদহ এলাকার বাসিন্দা হাসান আলী জোয়াদ্দার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খামখেয়ালিপনার কারণে অপরিকল্পিতভাবে এসব এলাকার খালের একাংশ খনন করায় এবং অপর অংশে খনন সম্পন্ন না করায় পানি বের হতে পারছে না। তাছাড়া এলাকার খালগুলো থেকে নেট-পাটা অপসারণ না হওয়ায় এবং ঘের মালিকরা যত্রতত্র বাঁধ দেয়ায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। ডুমুরতলা গ্রামের বাসিন্দা সমর কুমার বাওয়ালী জানান, বিগত তিন বছরে আমরা ইরি, বোরো ও আমন মৌসুমে ধান ঘরে তুলেছি। ঘেরে মাছ চাষ করে সাবলম্বী হয়েছি। কিন্তু এবছর আমডাঙ্গা খাল থেকে পানি না সরায়, খালের নেট-পাটা অপসারণ না করায় এবং ভবদহ স্লুইস গেটের শ্রী ও হরি নদীর পলি যথাযথভাবে অপসারণে ব্যর্থ হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবদহবাসীদের দাবি, টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়ন না করলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রেহাই পাওয়া কঠিন হবে। এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার অলিয়ার রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে টিআরএম প্রকল্প চালু করলে ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূর হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম জানান, ‘ভবদহ নিয়ে একটি বৃহৎ প্রকল্প রয়েছে, বর্তমানে সেটি প্লানিং কমিশনে রয়েছে। বর্তমানে যাতে ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমরা জরুরিভাবে কিছু কাজ করে যাচ্ছি।’