নারায়ণগঞ্জে মসজিদে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ ১৮ জনের মৃত্যু

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নারায়ণগঞ্জ শহরে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ থেকে আগুনে দগ্ধ হয়ে গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তির অধিকাংশকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর শনিবার সকালে সাংবাদিকদের জানান, সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ১১ জন মারা গেছেন। তারা হলেন- রিফাত, যুবায়ের, হুমায়ুন কবির, মোস্তফা কামাল, ইব্রাহীম, জুয়েল, সাব্বির, দেলোয়ার হোসেন, জামাল, জুনায়েদ ও কুদ্দুস ব্যাপারী। মৃতদের মধ্যে জুয়েল নামে শিশুটির দেহের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যায় বলে জানান বার্ন ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক ডা. হুসেইন ইমাম।
শাহবাগ থানায় পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুবুর রহমান বলেন, সকাল ১১টার দিকে মারা যান রাসেল নামে একজন।ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন বলেন, দুপুরে আরও কয়েকজন মারা যায়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৮ জন হল। তবে তিনি তাৎণিকভাবে সবার পরিচয় জানাতে পারেননি। বিকেল পর্যন্ত মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মসজিদের মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), হুমায়ুন কবির (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), যুবায়ের (৭), রিফাত (১৮), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮) সাব্বির (২১), রাশেদ (৩৪), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), জয়নাল (৫০), মাইনউদ্দিন (১২), কাঞ্চন হাওলাদার (৪০) ও নয়ন (২৭)। ডা. ইমাম বলেন, “দগ্ধদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। রোগীদের সবারাই শরীরের কমপক্ষে ৩০ শতাংশের বেশি দগ্ধ।” ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, “যারা ভর্তি আছেন, তারা কেউ শঙ্কামুক্ত নন। তাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বলা যায়।” আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকালে বার্ন ইউনিটে যান নারায়ণগঞ্জের ডিসি জসিম উদ্দিন। তিনি মৃতদের পরিবারকে ২০ হাজার আর আহতদের ১০ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়ার ঘোষণা দেন। সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিস্ফোরণে মসজিদের ৬টি এসি পুড়ে গেছে এবং জানালার কাচও উড়ে গেছে। গ্যাস পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। এই ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস ও জেলা প্রশাসনের প থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফায়ার ব্রিগেডের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বলেন, ‘এসিতে ব্যবহৃত ফ্রেয়ন গ্যাসের অস্থিত্ব আমরা মসজিদের ভেতরে বাতাসে পেয়েছি। এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার এশার নামাজের সময় ছয়টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।