ওষুধ নিয়ে বাণিজ্য : নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিন

0

দেশে করোনাভাইরাসের ওষুধের দাম নিয়ে রীতিমতো নৈরাজ্যও চলছে। পত্রিকায় প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তিন ধাপে চলছে ওষুধের দামের েেত্র নৈরাজ্য। এক কম্পানি থেকে আরেক কম্পানির একই জেনেরিকের একই ডোজের ওষুধের নির্ধারিত মূল্যেই রয়েছে বড় ব্যবধান। খুচরা বিক্রির েেত্র ফার্মেসিতে ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। করোনা মহামারিকে মওকা হিসেবে নিয়ে রমরমা বাণিজ্যেরও সুযোগ নিয়েছেন ওষুধশিল্পের এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। বিশেষ করে করোনাভাইরাসজনিত চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ওষুধের েেত্র এই সুযোগ নিয়েছেন দেশের কিছু ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিক্রেতারা। পাশাপাশি ওষুধের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অন্যদিকে ওষুধের দাম নিয়ে নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদপে দেখা যায়নি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প থেকে।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এখন দেশে প্রায় এক হাজার ৩০০ জেনেরিকের ওষুধ রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে মাত্র ১১৭টির দাম সরকার নির্ধারণ করে দেয়। বাকি সব নির্ধারণ করে প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো। তারা নিজেরা দাম ঠিক করে শুধু সরকারকে একটু দেখিয়ে নেয়। কোনো কোনো বিশেষ কোম্পানি সরকারের কাছ থেকেই অন্য যে কোনো কোম্পানির তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি দাম নির্ধারণ করিয়ে নেয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের এ েেত্র কঠোর হওয়া দরকার। তাঁদের মতে, কোনোভাবেই একটি ওষুধের দাম এক কোম্পানির চেয়ে আরেক কোম্পানির দ্বিগুণ বা এর চেয়ে বেশি হতে পারে না। কারণ ওষুধের মানগত পার্থক্য থাকা চলে না। ওষুধ সব একই মানের হতে হবে। শুধু আনুসাঙ্গিক কিছু খরচের কারণে অল্প কিছু ব্যবধান হতে পারে।
আমাদের মনে রাখা দরকার ওষুধ প্রস্তুত, আমদানি ও বিপণনের ব্যবসাটিও অন্য দশটি ব্যবসার মতো নয়। ওষুধ একটি সেবাপণ্য। কাজেই এই পণ্য প্রস্তুত, আমদানি ও বিপণনে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় আমরা দেখতে পাই, ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ থেকে যাচ্ছে। একই ওষুধ ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি থেকে ভিন্ন নামে যেমন বাজারে আসছে, তেমনি এসব ওষুধের মানেও ভিন্নতা রয়েছে। সব ওষুধ একই মানের নয়। সেই সঙ্গে দাম নিয়েও শুরু হয়েছে অরাজকতা। ওষুুধ বিক্রির েেত্রও কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না।
করোনার সুযোগ নিয়ে একই ওষুধ বিভিন্ন দামে বিক্রি হতে পারে না। মুনাফার লোভে এ ধরনের প্রবণতা একেবারেই কাম্য নয়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী যে বাণিজ্যিক সুবিধা নিচ্ছে তা অপরাধ হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সহায়তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আরো তৎপর হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।