যশোরের শার্শা ও বেনাপোল সীমান্ত সোনা চোরাচালানের নিরাপদ রুট

0

শার্শা (যশোর) সংবাদদাতা ॥ যশোরের শার্শা ও বেনাপোল সীমান্ত সোনা চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সোনাপাচার করা হলেও সোনার মালিক রাঘব-বোয়ালরা রয়ে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। যে কারণে সোনাপাচার বন্ধ হচ্ছে না। আর এ সোনা পাচারের সাথে জড়িত রয়েছে বিভিন্ন সিন্ডিকেট। সীমান্তের এসব সিন্ডিকেট পরিচালনা করছেন ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতা ও জনপ্রতিনিধি। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে সীমান্ত পর্যন্ত রয়েছে এ সিন্ডিকেটের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। পাচারের সময় বিজিবি বা প্রশাসনের হাতে সোনা ধরা পড়লে বহনকারীদের নামে মামলা হচ্ছে। অধরায় রয়ে যাচ্ছে সোনার মূল মালিকরা।
জানা গেছে, শার্শা ও বেনাপোল সীমান্তের রুদ্রুপুর, গোগা, ভূলোট, পুটখালী, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, বড়আঁচড়া, সাদীপুর, রঘুনাথপুর, বাহাদুরপুর, শিকারপুর, শালকোনা ও কাশিপুর সীমান্ত বর্তমানে সোনা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। গত ২৯ আগস্ট ভারতে পাচারের সময় বেনাপোলের সাদিপুর সীমান্ত থেকে ৯ কেজি ২শ গ্রাম সোনার বারসহ এক নারী সোনাপাচারকারিকে আটক করে বিজিবি সদস্যরা। আটক ওই নারী বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের দুখু মিয়ার স্ত্রী। ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা জানান, বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ সোনারবার ভারতে পাচার হচ্ছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে বিজিবি সদস্যরা বেনাপোলের সাদিপুর সীমান্তে দুখু মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৯ কেজি ২শ গ্রাম সোনারবারসহ বানেছা খাতুন নামে এক গৃহবধূকে আটক করা হয়। তিনি জানান, আটক বানেছা খাতুন বিজিবির কাছে স্বীকার করেছে, সে ও তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে ভারতে সোনা পাচার করে আসছে। বিনিময়ে তাদের বারপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, সীমান্তে সোনাপাচাররোধে বিজিবি সার্বণিক তৎপর রয়েছে। বিজিবি সীমান্তের সোনাপাচারের মূল মালিকদেরকে আটকের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে যশোর শহরের চাঁচড়া মোড় থেকে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকারসহ ৩ জনকে আটক করে। এ সময় বিজিবি প্রাইভেটকারে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় ১০ কেজি সোনারবার জব্দ করে। বিজিবি সোনারবারসহ আটক প্রাইভেটকার চালক ইমান আলী ও সাথে থাকা দুইজনকেই কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করে। আটক প্রাইভেটকার চালক পুটখালীর গরু ব্যবসায়ী নাসিরের ব্যক্তিগত গাড়িচালক। অপর দুইজনও তার গরুর খাটালের কর্মচারী। চাঁচড়া থেকে বিজিবির হাতে আটক ১০ কেজি সোনারবার ও গত শুক্রবার বেনাপোলের সাদীপুর থেকে বিজিবির হাতে আটক সোনার মালিক নড়াইলের নড়াগাতি উপজেলার খাসিয়াল গ্রামের সজল আহম্মেদ (৩৫) ও বেনাপোল পুটখালী গ্রামের গরু ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন (৩৫)। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোর কোতয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) তাসনিম আলম জানান, তিনি এ মামলার তদন্ত অফিসার ছিলেন। এখন মামলাটি সিআইডিতে আছে। এ বিষয়ে সিআইডির তদন্তকারী অফিসার হাসমি বলেন, ‘আটক ৩ জনের নামে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। তার কাছে আটক সোনার মূল মালিক নড়াইলের নড়াগাতি থানার খাসিয়াল গ্রামের সজল আহম্মেদ ও বেনাপোল পুটখালী গ্রামের গরু ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলেননি। যশোরের সিআইডি অফিসার জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ ব্যাপারে অবগত নন বলে জানান। তবে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে উলেখ করেন।