যশোরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত: আওয়ামী সরকার দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ যশোরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির দ্বারপ্রান্তে এসেও জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দেশে আইনের শাসন নেই। মানবাধিকার ভুলুণ্ঠিত, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী আওয়ামী সরকার নিজ হাতে দেশের গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে। তারা দেশের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার বক্তব্যের শুরুতে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। গুরুতর অসুস্থ চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। পাশাপাশি দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, অপর সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য আফসার আহমেদ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি চৌধুরী শহিদুল ইসলাম নয়ন, সাবেক সংসদ সদস্য আলী কদর, বিএনপি নেতা শহীদ আবু বকর আবু, শহীদ নাজমুল ইসলাম, মুরাদ হোসেন কাজল, আলতাফ হোসেন, আবিদুর রহমান কুয়াশা, আবু সালেহ স্বপন, খালেক বিশ্বাস, নুরুল হকসহ সকল প্রয়াত নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এছাড়াও দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে বিদেশী প্রভূদের দাসত্ব করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারী এই অবৈধ সরকার শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। যে কারণে জনগণ ভোট না দিলেও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। যে কারণে দেশে আজ ভয়াবহ একদলীয় এবং কতৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা চলছে। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে তাদের মুক্তভাবে বেঁচে থাকা এবং কথা বলার কোন স্বাধীনতা নেই। আজকে দেশে যখন ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তখন সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা লুটপাটের মহাউৎসব পালন করছে। আর শহীদ জিয়ার সৈনিকরা অতীতের ন্যায় এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। কখনো তাদের পাশে সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে আবার কখনো কর্মহীন এবং অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে। তাই আজ এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ নিতে হবে ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মধ্য দিয়ে দেশের লুন্ঠিত গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারে ফিরিয়ে দিতে হবে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার। আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, বিএনপি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়ে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে গেছে। এই দলের নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শনকে ধারণ করে বাকশালকে হটিয়ে গণতন্ত্রমুক্ত করে। প্রতিষ্ঠিত করে দেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। এই দলের নেতা-কর্মীরা ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মধ্য দিয়ে কর্তৃত্ববাদী একদলীয় সরকারের সীমাহীন দমন-নিপীড়ন এবং সর্বোপরি দলকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থতায় পর্যবসতি করেছে। বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে গণতন্ত্রের মশাল নিয়ে স্বৈরাচারকে হটিয়ে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ঠিক একইভাবে তার নেতৃত্বে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূর-উন-নবী, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল। পরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এবং অসুস্থ দলের চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দলের প্রয়াত অন্যান্য সকল নেতা-কর্মীর আত্মার মাগফেরাত কামনা ও অসুস্থদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়। পাশাপাশি ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে দেশ ও জাতির মুক্তি কামনা করে এবং বানভাসি মানুষের দুর্দশা লাঘবে দোয়া করা হয়।
এর আগে ভোর ৬টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সকাল ১০টায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত কারবালা কবরস্থান যান। সেখানে দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তিনি প্রয়াত সকল নেতা-কর্মীর কবর জিয়ারত করেন। দিনব্যাপী সকল কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদিকা জাহানারা সিদ্দিকী। অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, আলহাজ্ব মিজানুর রহমান খান, আব্দুস সালাম আজাদ, নগর বিএনপির সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূর-উন-নবী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য একে শরফুদ্দৌলা ছটলু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সিরাজুল ইসলাম, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন টেনিয়া, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, জেলা মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদিকা জোস্না আলীম, জেলা তাঁতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি তানভীর রায়হান তুহিন প্রমুখ।