সুন্দর সাহা ॥ আজ ১ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। জিয়াউর রহমানের বিএনপি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটে। তখন দেশ ও জাতি এক চরম হতাশায় নিমজ্জিত। ঠিক সেই মুহূর্তে এ দেশের সিপাহী-জনতা একই বছরের ৭ নভেম্বর শহীদ জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশের রাষ্ট্র মতায় আসীন করান। তিনিই প্রথম দেশে একদলীয় বাকশালের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন। ১৯৭৮ সালের এই দিনে জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। বিএনপি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্রের পাশাপাশি এনে দেন আমাদের জাতিসত্ত্বার পরিচয়, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। জিয়াউর রহমানের আদর্শ লালন করেই বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাঁচবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মতায় আসীন হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল এ সময়কালে। রাষ্ট্রচিন্তক ব্যক্তিত্বরা মনে করে, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের জেড ফোর্সের অধিনায়ক বীরউত্তম জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে অনুভব করেছিলেন কৃষিই হবে এ দেশের মূলচালিকা শক্তি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদত বরণের পর দলের বর্তমান চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি তিনবার মতায় আসীন হয়। বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বিএনপি আজ তাদের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে বলেছেন, দেশ আজ দুঃশাসন কবলিত। বর্তমান দুঃসময়ে জনগণকে সংগঠিত করার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, এর ওপর করোনা মহামারীর আক্রমণে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিণে আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে দিনাতিপাত করছে দেশের মানুষ। গুম-খুনের আতঙ্ক মানুষের নিত্য সঙ্গী। আইন, বিচার, প্রশাসনকে সরকার কব্জার মধ্যে রাখার চেষ্টায় মরিয়া। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বেআইনী কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে সমাজে দেখা দিয়েছে বিপজ্জনক বিশৃঙ্খলা। খুন-খারাবী, নারী-শিশু নির্যাতন, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ইত্যাদি অনাচারের মাত্রা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যেখানে জনগণের প্রতিপ সেখানে মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা থাকতে পারে না। সুতরাং জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্যই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে হয়রানির খড়গ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার শিকার। কারণ তিনিই গণতন্ত্রের প্রতীক এবং জনগণের নাগরিক ও বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতার পে প্রধান কন্ঠস্বর। পাশাপাশি দেশের যে কোন ক্রান্তিলগ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। বিএনপি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে দেশবাসীকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য উদাত্ত আহবান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।