আমরা একটি ভয়ঙ্কর অসুস্থ পরিবেশের মধ্যে আছি : রিজভী

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমরা একটি ভয়ঙ্কর অসুস্থ পরিবেশের মধ্যে আছি। সুস্থ গণতন্ত্র নেই বলে আমাদেরকে নানাভাবে নানা কৌশলে কথাগুলো বলতে হচ্ছে। কথার মধ্যে যদি কোন ব্যত্যয় ঘটে তবে নিস্তার নেই। ডিজিটাল আইন আছে, সরকারের অনেক অস্ত্র আছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা এটি একটি অস্ত্র, নানা ধরনের গালাগালি এটি একটি অস্ত্র, ডিজিটাল আইন এটি একটি অস্ত্র। এরপর আরও বড় অস্ত্র আছে বিচারবহির্ভূত হত্যা। এগুলো সব সরকারের হাতে। প্রয়োজনে বিরোধীদলের কণ্ঠকে রুদ্ধ করার জন্য, মিছিল বন্ধ করার জন্য, রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করার জন্য সরকারের যখন যে অস্ত্র ব্যবহার করা দরকার সেই অস্ত্র তারা নির্বিঘেœ ব্যবহার করছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে ছাত্রদল মুন্নিজান হল শাখার সাবেক সভানেত্রী দিলরুবা শওকত এর রুহের মাগফিরাত কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বোধোদয় হয়েছে যে কখন কি ঘটে যায় বলা মুশকিল। তাদের নেতাকর্মীদের বলছেন, “সাবধান বেশি বাড়াবাড়ি কইরেন না। কখন কি করা যায় বলা যায় না।” ওবায়দুল কাদের সাহেব ১২ বছর পার হয়ে গেল এর মধ্যে বরকত এর টাকা পাচার হলো, এরমধ্যে ফরিদপুরের ছাত্রলীগের সভাপতির টাকা পাচার হল, এরমধ্যে করোনা পরীার নকল সনদপত্র দেওয়া হল, রিজেন্ট, জিকেজির মত ভুয়া হাসপাতালে আপনার ভুয়া সনদপত্র দেওয়া হল এই কথাগুলো আগে বলেননি কেন? আজকে আপনাদের দলের যে সিন্দুক সেই সিন্দুক খুলে কেন আমরা সম্রাটকে দেখছি? আমরা খালেদকে দেখছি, আমরা শামীমকে দেখছি। তো এই কথাগুলো যদি আগে বলতেন এবং তা সত্যি সত্যি প্রয়োগ করতেন তাহলে আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। আপনার পুলিশ বাহিনী আছে, অস্ত্র আছে কিন্তু জনগণের আস্থা আপনার নেই। এই যে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতা এটা কেন হয়েছে? আপনারা ২০০৯ সালে যখন মতায় এসেছিলেন তখন থেকে এসব কথা বললেই নেতাকর্মীরা অনেকটা সতর্ক থাকতো। আপনারা আশকারা দিয়েছেন আপনাদের এমপি বলেছে তোমরা নিজেরা নিজেরা গন্ডগোল করো বাড়িতে বাড়িতে যেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করতে পারো না। ডিআরইউতে আপনাদের আরেকজন এমপি বলেছে তোমরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করো ছাত্রদল বিএনপি কর্মীদের সাথে পারোনা। আপনারা হত্যার উস্কানি দিয়েছেন এবং আপনাদের সেই উস্কানিতে ছাত্রলীগ বিশ্বজিতের মতো এক কিশোরকে হত্যা করেছে। সেই দিন আপনি ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক না হন বড় নেতাই ছিলেন আপনার বিবেক তখন নাড়া দেয়নি? ইলিয়াস আলীর মতো একজন সাবেক এমপি কে গুম করে দেওয়া হল আপনার বিবেক নাড়া দেয়নি? কে গুম করছে আপনি তো জানেন।
রিজভী বলেন, কেউ তার নিজের স্বাধীনতা খর্ব করে? কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকারের কাছে স্বেচ্ছায় নিজেদের স্বাধীনতা সমর্পন করেছেন। যারা সংসদ সদস্য প্রার্থী আরপিওতে এদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের কাছে আছে। কারণ গণতন্ত্র থাকলে নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র সত্তা। আপনারা নিজেরা নিজেদেরকে আত্মসমর্পণ করে আমি বলবো নিজেদেরকে হিজড়ায় পরিণত করেছেন। সংবিধান তাদেরকে নিজস্ব স্বাধীনতা দিয়েছে আর ১৯৭২ গণপ্রতিনিধি অধ্যাদেশ তাদের সেই মতা কেড়ে নিয়েছে। অর্থাৎ কার প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে না রাখতে হবে এইটা একটা আলাদা আইন করার জন্য তারা একটি পূর্ণাঙ্গ রেজুলেশন নিয়েছে। এটা এখন পার্লামেন্টে যাবে এবং সেটা পাস হবে অর্থাৎ এই নির্বাচন কমিশন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে তাদের আত্মার মাধুরী মেশানো লোককে বসিয়েও শেখ হাসিনা প্রশান্তি পাচ্ছে না। এখন নির্বাচন কমিশনের মতাকে আইন করে সরকার নিজের হাতে রাখবেন। শেখ হাসিনা হবেন একক মতার অধিকারী। কারণ আইন তো শেখ হাসিনার হাতে আর সেই আইন শেখ হাসিনা হাতে তুলে দিচ্ছেন বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। গতকাল দেখলাম টিআইবি ও এটার প্রতিবাদ করছে। তিনি বলেন, বাকশাল মানে, একদলীয় শাসন বাকশাল মানে অন্য কারো কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে না, গণতন্ত্র থাকবেনা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে না। কেউ সরকারের সমালোচনা করলে তাকে জননিরাপত্তা আইনে আটকে রাখা হবে। অর্থাৎ শেখ হাসিনা অখন্ড প্রভূ সে যা বলবে তাই হবে। সংগঠনের সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহার এর সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত,আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম,কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ,এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।