মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী পীর বলুহ দেওয়ানের মেলা এ বছর অনুষ্ঠিত হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে মেলা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে স্বল্প পরিসরে হলেও মেলা বসাতে আয়োজক কমিটি চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। কোন মাইকিং কিংবা ঢাক ঢোল পিটিয়ে জানান দেওয়া হয় না, প্রতি ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার এলেই হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছার পীর বলুহ মেলায়। যুগযুগ ধরে একই নিয়মে মেলা চলে আসলেও এ বছর মেলা আদৌ হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বাংলা সনের ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহ পার হতে যাচ্ছে কিন্তু আজও মেলা হবে কি হবে না তা পরিষ্কার ভাবে কেউ বলতে পারছে না। অথচ অন্যান্য বছরে এই সময়ে মেলার মূল চত্বর উপজেলার হাজরাখানা গ্রামসহ পাশর্^বর্তী গ্রামগুলোতে বয়ে যেত ঈদের আনন্দ। যাকে নিয়ে মেলার আয়োজন সেই পীর বলুহ দেওয়ানের রওজা শরিফ ধোয়া মোছা, মেলা চত্বরে যে সব অস্থায়ী দোকান পাট বসবে তাদের জায়গা নির্ধারণ করে দোকান তৈরির প্রস্তুতি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ফার্নিচার তৈরি করে মজুদ করে রাখা কোনকিছুই এবছর দেখা যায়নি।
শনিবার স্থানীয় বাসিন্দা ময়না বেগম জানান, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে এই মেলা দেখে আসছেন। ভাদ্র মাস এলেই বেড়ে যায় কাজের পরিধি। বাড়ি ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, মেয়ে জামাইকে দাওয়াত দেয়াসহ চলে অনেক কাজ, কিন্তু এ বছর কিছুই হয়নি। শুনছি করোনার কারণে মেলা বসবে না। তাই মনটা বেজায় খারাপ, কেননা ঈদ, পূজা পার্বনে যত না আনন্দ হয় তার চেয়ে মেলা এলে আমরা বেশি আনন্দ করি। আয়েশা আক্তার বলেন, আমি প্রায় ৫ বছর এই গ্রামের বধূ হয়ে এসেছি। এই ৫ বছর দেখেছি মেলা এলে অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি হতে। কিন্তু এ বছর কোনকিছুই হচ্ছে না। তাই আমার মত অনেকেরই মন খারাপ। সাতক্ষীরার আনছার আলী জানান, তিনি প্রতি বছর বলুহ মেলায় দোকান দেন। করোনার কারণে মেলা হবে না শুনে নিজে দেখতে এসেছেন। মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য বাবলুর রহমান ওরফে বাবু বলেন, পীর বলুহ মেলা এ অঞ্চল তো বটেই, সারা দেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এ মেলা। ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার এলে মানুষ বানের পানির মত ছুটে আসেন মেলাতে। কিন্তু এ বছর মেলা হবে কি না তা নিয়ে আমরা বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। করোনা ভাইরাসের কারণে এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ হতে কোন অনুমতি পাইনি।