লোহাগড়া উপজেলা পিআইও’র বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পোড়ানোর অভিযোগ

0

শিমুল হাসান,লোহাগড়া(নড়াইল)॥ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয় ধামাচাপা দিতে গোপনে দপ্তরের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দূর্নীতির বিষয়টি তদন্তকালে ওই কর্মকর্তা কাগজপত্র না দেখাতে পেরে অফিস সহকারীর উপর দায় চাপাচ্ছেন বলেও অভিযোগ। এ ব্যাপারে গত সোমবার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ মনিরুজ্জামান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে কাগজ পোড়ানোসহ দূর্নীতির বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১৭টি সেতু/কালভার্টের সিডিউল বিক্রির ৪ লাখ ৮৬ হাজার এবং এইচবিবি রাস্তার সিডিউল বিক্রির ৬ লাখ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস,এম এ, করিম আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও ওই কর্মকর্তা অফিসের লোকদের গালিগালাজ করেন বলেও অভিযোগ। তৎকালিন অফিস সহকারী জিয়াউর রহমান গত বছর ৩০ ডিসেম্বর দূর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে ওই অভিযোগগুলি করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ জুন দূর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নড়াইলের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে জেলা ত্রান ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা(চঃদাঃ) মোঃ মিজানুর রহমান চলতি বছরের ৬ জুলাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সিডিউল বিক্রির টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতের বিষয়ে তদন্তকালে ওই কর্মকর্তা নথি পত্রাদি উপস্থাপন করেননি। অভিযোগে আরো জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস. এম,এ, করিম গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের সেতু/ কালভাট ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরের হেরিং বোন বন্ডকরন প্রকল্পের সিডিউল, সিএস শীটসহ সকল কাগজপত্র নিজ কক্ষের আলমারিতে সংরক্ষন করেন। যে কক্ষের তালা-চাবি অন্য কোন কর্মচারীর কাছে নেই। এ সুযোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্ত এস. এম,এ, করিম অফিসের সাবেক অফিস সহায়ক শিকদার আশরাফুল আলম ও কার্যসহকারী হারুন অর রশিদের সহযোগিতায় রাতের আঁধারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে দিয়েছেন, যা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের নৈশ প্রহরীরা দেখেছেন বলেও অভিযোগ করেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ মনিরুজ্জামান। ধুরন্দর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস. এম,এ, করিম সব কিছুর দায়ই অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ মনিরুজ্জামানের উপর বর্তানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস,এম,এ করিমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র জানান, আমার কাছে ওই অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ মনিরুজ্জামান নিজেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস,এম,এ করিমের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলা সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। উত্থাপিত অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিষয়টির সুরাহা করা হবে বলেও তিনি জানান।