প্রধানমন্ত্রী তার দায় এড়াতে পারবেন? প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকারের নেতাকর্মীদের করোনা সার্টিফিকেট বিক্রির কারণে ইতালিতে বাংলাদেশ থেকে আগত কোনো ব্যক্তিকে ঢুকতে দেয়া হয় না, নিউ ইয়র্ক টাইমসে নেতিবাচক প্রবন্ধ হয় বাংলাদেশকে নিয়ে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের শীর্ষ দেশগুলোতে বাংলাদেশ উঠে আসে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্নের জন্য তাহলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড বা সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে কি তাহলে এই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দণ্ডিত হবেন না? প্রধানমন্ত্রী কি তার দায় এড়াতে পারবেন? শুক্রবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন রাখেন ফখরুল।
তিনি বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র তথ্যমতে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে। প্রায় সবগুলো মামলার কমন অভিযোগ হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশের জন্য তথাকথিত সম্মানহানি বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপরাধ। এসব অভিযোগ বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাবেন, সরকারি দলের লুটেরাদের বিরুদ্ধে কথা বললে, রাজনৈতিক মত প্রকাশ করলে, সরকারের সমালোচনা করলে মামলা করা হয়েছে। মামলার ভয়ে আজ জাতির কণ্ঠ রুদ্ধ। বিবেকের স্বাধীনতা শৃঙ্খলিত যা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইতোমধ্যেই সংবাদপত্র- সম্পাদক পরিষদ তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের জন্য সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে লিখতে পারছেন না। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই কালো আইন বাতিলের দাবি তুলেছে। বিএনপি শুরু থেকেই বলে এসেছে এই আইন কালো আইন। এই আইন সংবিধানবিরোধী এবং এই আইন জনগণের কণ্ঠ রোধ করার জন্য সরকারের হাতিয়ার। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই আইন করেছে। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) কার্যকর রয়েছে। আর্টিকেল ১৯-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২২ জুন পর্যন্ত মোট মামলা হয়েছে ১০৮টি। এই সব মামলায় মোট আসামি ২০৪ জন। তাদের মধ্যে সাংবাদিক ৪৪ জন, আর অন্যান্য পেশায় কর্মরত ও সাধারণ মানুষ ১৬০ জন। এই হিসেবে প্রায় ২৫ ভাগ আসামিই হলেন সাংবাদিক।
বিএনপি মহাসচিবের ভাষ্য, বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ। কারণ অনেক মামলার খবরই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয় না। তাই মানবাধিকার সংগঠনগুলোও তার খোঁজ পায় না। ফলে তাদের সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি মাত্র সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল আছে ঢাকায়। ডিজিটাল এবং তার আগের আইসিটি আইনের সব মামলার হিসাব আছে সেখানে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, এই বছরের মার্চ পর্যন্ত ডিজিটাল আইনে মামলা হয়েছে মোট ৩২৭টি। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৫০টির মতো মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বিচারাধীন মামলা আছে এ পর্যন্ত মোট এক হাজার ৯৫৫টি। এরমধ্যে থানায় দায়ের করা এক হাজার ৬৬৮টি এবং আদালতে ২৮৭টি। ৫৫টি মামলা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত আছে।