চৌগাছায় মৌসুমের শুরুতেই হোঁচট খেলেন পাট চাষিরা : বিঘা প্রতি লোকসান ৮ হাজার টাকা

0

এম. এ. রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না কৃষক। বিঘা প্রতি প্রায় ৮ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।  উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় এ বছর তোষা জাতের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার হেক্টর। চাষ হয়েছে ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার বাজারগুলোতে নতুন পাট ওঠা শুরু হয়েছে। গত বছর মৌসুমের শুরুতে পাটের দাম প্রতি মণ ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ছিল। মৌসুমের শেষের দিকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত দাম পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে পাটের দাম মণ প্রতি ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা। পাটের দাম কমায় কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে গেছে।
উপজেলার চুটারহুদা গ্রামের চাষি আব্দুল খালেক জানান, ১ বিঘা জমিতে পাট চাষে জমি লিজ, চাষ, বীজ, সার, সেচ, নিড়ানী, কাটা, জাগদিয়া, ধোয়া ইত্যাদি বাবদ তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। ১ বিঘা জমি থেকে পাটের ফলন পাওয়া যায় ৯ থেকে ১০ মণ। ১০ মণ পাটের বর্তমান বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা। এর সাথে ১ বিঘার পাটখড়ি ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও মোট মূল্য পাওয়া যায় ১৬ হাজার টাকা। ফলে ১বিঘা পাটে লোকসান গুণতে হচ্ছে ৮ হাজার টাকা।
পুড়াপাড়া বাজারের পাট ব্যবসায়ী সরজিৎ ঘোষ জানান, উপজেলার চৌগাছা, সলুয়া, পুড়াপাড়া, হাকিমপুর, সিংহঝুলীসহ বিভিন্ন বাজারে নতুন পাট উঠেছে। এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কম দামে ভালো পাট কিনে গুদামজাত করছেন। বাজারে পাটের আমদানি ভালো হলেও বড় ব্যবসায়ীরা পাট কিনতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিগত কয়েক বছর যাবৎ দাম চড়া থাকায় এ অঞ্চলের চাষিরা নতুন করে পাট চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
পাট চাষি আনিসুর রহমান জানান, মৌসুমের শুরুতে কৃষকেরা পাট জাগ দিতে দারুণ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। এ বছর অপরিষ্কার পানিতে পাট পচায় পাটের রং কালো হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রাম থেকে আসা বেশির ভাগ পাটের রং কালো। চৌগাছা বাজারে পাট বিক্রি করতে আসা আন্দারকোটা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর বদ্ধ ও পঁচা পানিতে পাট জাগ ও মাটি চাপা দেওয়ার কারণে পাটে সোনালী রং আসেনি। পাটের দাম কমে যাওয়ার কারণে লাভতো দূরে থাক ধারদেনাই পরিশোধ হচ্ছে না। সোনালী আঁশ পাট এ বছর কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইস উদ্দীন জানান, এ বছর পাটের উপাদন খরচ বেশি হয়েছে। প্রায় ৮০ ভাগ পাট কাটা শেষ হয়েছে। তবে পাটের দাম কৃষকদের কাঙ্খিত মানের নয়। মণপ্রতি ২ হাজার ৫শ হলে কৃষক বেঁচে যেত।