শিগগিরই লেবানন থেকে প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননে ১ লাখ ৬০ হাজারের মতো বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজারই নানা কারণে অবৈধ হয়ে পড়েছেন। এসব অবৈধসহ দেশে ফিরতে আগ্রহীদের শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ২০২১ সাল নাগাদ দেশে আসতে আগ্রহী সবাইকেই ফেরানো সম্ভব হবে। চলতি বছরের শুরুতেই লেবানন থেকে ফিরতে আগ্রহীদের নাম নিবন্ধনের সুযোগ দেয় দূতাবাস। তখন কাজের কোনো সুযোগ না থাকায় সেখান থেকে বৈধ-অবৈধ মিলে ৭ হাজার ৬৭৪ জন দেশে ফিরতে দূতাবাসের মাধ্যমে নিবন্ধন করেন। করোনার কারণে মার্চের মাঝামাঝিতে নিবন্ধন বন্ধ হয়ে যায়। তবে নিবন্ধিতদের দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম চলমান থাকে। বিমানের টিকিট পাওয়ার ওপর নির্ভর করে এসব কর্মীকে দেশে পাঠানো হবে বলে দূতাবাস সূত্র জানায়। এই প্রসঙ্গ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একেএ মোমেন বলেন, ‘গত বছর থেকেই লেবাননের শ্রমবাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সেখান থেকে অনেকেই দেশে ফিরতে চান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই তাদের ফেরত আনার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। যদিও এই সময়ে ফ্লাইট সমস্যাসহ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা আশা করছি, যতজন বাংলাদেশি শ্রমিকই দেশে ফিরতে আগ্রহ করবেন, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, সরকার তাদের ফেরার ব্যবস্থা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।’
প্রসঙ্গত, লেবাননের অর্থনীতিতে মারাত্মক ধস নেমেছে। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে অধিকাংশ বাংলাদেশি কর্মী মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। আবার অনেক নিয়োগকর্তাই তাদের কর্মীদের নিজ নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য করছেন। কেউ দেশে ফিরতে না চাইলে তাদের জোর করে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে স্থানীয় পুলিশ রাস্তা থেকে এসব অভিবাসী কর্মীকে ধরে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে আটকে রাখছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে সরকারের আর্থিক সহায়তায় ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ছাড়া পেয়ে দেশে ফিরেছেন ৮৪ জন। এদিকে, লেবাননের প্রায় ৮ মাস ধরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এরমধ‌্যে তবে গত মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটায় লেবানন থেকে সব প্রবাসীই দেশে ফিরতে চান।
জানতে চাইলে দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) দূতাবাস প্রধান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কাগজপত্রহীন প্রবাসীদের এক বছরের জরিমানা ও বিমান টিকিটের টাকা পরিশোধ করে বিশেষ সুযোগে সেপ্টেম্বর থেকে দেশে ফেরানোর পরিকল্পনা ছিল আমাদের। এই কাজে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সহযোগিতা করেছে।’ দূতাবাস প্রধান বলেন, ‘এই সময়ে প্রাথমিকভাবে প্রায় সাড়ে পাঁচশ জন দেশে ফিরতে পারবেন। দূতাবাস থেকে যাদের টিকিট দেওয়া হবে, তারা করোনা নেগেটিভ পেলে দেশে ফিরতে পারবেন।’ যাদের করোনা পজিটিভ আসবে, তাদের পরবর্তী সময়ে পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান।