করোনার কারনে পাসপোর্টে জট

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে বড় ধরনের জট সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৬শে মার্চ সরকারি অফিস ছুটি ঘোষণার পর পাসপোর্ট অফিসও বন্ধ হয়ে যায়। এতে গত ৪ মাসে পাসপোর্ট অফিসে সাড়ে ৩ লাখ আবেদন ঝুলে আছে। যার অধিকাংশ ফিঙ্গার প্রিন্টের কারণে। এ ছাড়াও গত ৪ মাসে দেশের বাইরে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে বিশেষ বিমানে করে ৫ লাখ আবেদন দেশে এসেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে আবেদনকারীদের পাসপোর্ট দিতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আরো বড় ধরনের জটিলতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ ওই সময় নতুন আবেদন পড়ার পাশাপাশি পুরনো যাদের আবেদন ঝুলে আছে তাদেরও পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে হবে। পাশাপাশি অনলাইনেও আবেদন বেশি পড়বে। বিষয়টি নিয়ে খোদ কর্তৃপক্ষই চাপের মধ্যে আছেন।
কারণ বড় ধরনের ডেলিভারি দেয়ার জন্য যে প্রিন্ট মেশিন ও দক্ষ জনবল থাকার কথা তা পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ঘাটতি রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা এই জট কমাতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছেন। পাশাপাশি একাধিক প্রিন্ট মেশিন কেনারও প্রক্রিয়াধীন আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের সেবাকার্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ মানবজমিনকে জানান, প্রাণঘাতী করোনায় পাসপোর্ট অধিদপ্তরে কাজের গতি কমেছে। নতুন আবেদন নেয়া হচ্ছে না। নতুন আবেদনে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিতে হয় এজন্য সেটি বন্ধ আছে। কারণ সেখানে করোনা ছড়ানোর শঙ্কা আছে। ই-পাসপোর্ট বন্ধ আছে। তিনি জানান, শুধুমাত্র রি-ইস্যুর আবেদন নেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুত আগের মতো আমরা ডেলিভারি দিতে পারবো।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬শে মার্চ সরকারি ছুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায় পাসপোর্ট অফিস। বন্ধ হয়ে যায় ই-পাসপোর্টের অনলাইন আবেদনও। পুরনো ডেলিভারিগুলোও দেয়া হয়নি। এতে জট পড়েছে পাসপোর্ট অফিসে। এখন শুধু ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে রি-ইস্যু করা পাসপোর্টগুলো। এ ছাড়াও যেসব মুমূর্ষু রোগী বিদেশে চিকিৎসা নিতে চান তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে জরুরি পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন গড়ে ১৪ হাজার আবেদনকারী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করতেন। আবেদনকারীদের ফি হিসাব করলে তাদের কাছ থেকে অধিদপ্তর প্রতিদিন প্রায় ৫ কোটি টাকা আদায় করে থাকে। ২২ কর্মদিবসে মাসে দাঁড়াই ১৫০ কোটি টাকা। এখন রি-ইস্যু ও জরুরি পাসপোর্ট থেকে সরকার দিনে মাত্র ২০ লাখ টাকা রাজস্ব পাচ্ছে। এতে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চলতি অর্থ বছরে সরকার ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে।