২৯ শতাংশ পোশাক শ্রমিক ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিজে নেন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥দেশের তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত পোশাক শ্রমিকদের ৩৬ শতাংশ শ্রমিক উপার্জনের ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কারো সঙ্গে মিলে সিদ্ধান্ত নেন। ২৯ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেন। এদের ২৪ শতাংশ নারী ও ৪৫ শতাংশ পুরুষ।
বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব মূল্যায়ন করতে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও মাইক্রো ফাইন্যান্স অপরচুনিটিজ (এমএফও) এর জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
১৪ সপ্তাহে চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত ১৩৬৭ জন শ্রমিকদের ওপর একটি জরিপ চালিয়ে এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের তিন-চতুর্থাংশ নারী।
সোমবার (১৩ জুলাই) পাঠানো জরিপে দেখা যায়, আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতা পুরুষ শ্রমিকদের থেকে নারী শ্রমিকদের মধ্যে বেশি। অন্যদিকে, আর্থিক সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার প্রবণতা নারীদের থেকে পুরুষদের বেশি। জরিপে শ্রমিকদের আয় ব্যবস্থাপনা, ব্যয়, সঞ্চয় ও শিক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।
উপার্জিত অর্থ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক অন্য কারোর সঙ্গে মিলে সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব ভাগাভাগি করাদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ নারী ও ২৩ শতাংশ পুরুষ।
১৪ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক নিজেদের যতটুকু দরকার রেখে বাকি উপার্জন অন্য কারোর কাছে দিয়ে দেন। এদের ১৫ শতাংশ নারী ও ১১ শতাংশ পুরুষ। ৬ শতাংশ নারী গার্মেন্ট শ্রমিক তাদের উপার্জন অন্য কাউকে দিয়ে দেন যারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। ৭ শতাংশ নারী ও ৪ শতাংশ পুরুষ অন্য কারোর হাতে উপার্জনের অর্থ তুলে দেন।
৬১ শতাংশ শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ নারী ও ৪৬ শতাংশ পুরুষ ব্যয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পুরো পরিবার মিলে গ্রহণ করেন। ১০ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন যে অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত অন্য কেউ নেন। এদের মধ্যে ১০ শতাংশ নারী ও ৮ শতাংশ পুরুষ।
জরিপে বলা হয়েছে, ৩৫ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক নিজেরাই সঞ্চয় করার সিদ্ধান্ত নেন। এদের মধ্যে ৩০ নারী ও ৪৯ শতাংশ পুরুষ। ৫৫ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক সঞ্চয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেন পুরো পরিবারের সঙ্গে মিলে। এদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ নারী ও ৪২ শতাংশ পুরুষ। ৮ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন সঞ্চয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত অন্য কেউ নেন, ২ শতাংশ এ বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি।
নিজেদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কে নেয়, এ প্রশ্নের উত্তরে, ২৬ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক জানিয়েছেন যে তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন। নারীদের মধ্যে ২৩ শতাংশ ও পুরুষদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ নিজেদের সন্তানদের শিক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
৬৭ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন যে সন্তানদের শিক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পুরো পরিবার মিলে নেওয়া হয়। যারা শিক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পরিবারের সঙ্গে মিলে নেন, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও ৫৫ শতাংশ পুরুষ। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭ শতাংশ জানিয়েছেন যে ‘অন্য কেউ’ তাদের সন্তানদের শিক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেন।