ব্রিটিশ-পাকিস্তানিদের মতো আ. লীগও রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করছে: মির্জা ফখরুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসক শ্রেণির মতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (১০ জুলাই) সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এমএ হক স্মরণে ‘এমএ হক স্বাস্থ্যসেবা’ কর্মসূচির ভার্চুয়াল উদ্বোধনী সভায় এ অভিযোগ করেন ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান সরকার জনগণের শোষক হিসেবে দেখা দিয়েছে। আমরা আগে দেখেছি, ব্রিটিশরা আমাদের সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। এরপর দেখেছি পাকিস্তানিরা আমাদের শোষণ করতো। এখন বর্তমান সরকারও দেশের ‍ও রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করছে, জনগণের পয়সা কেটে লুট করছে।’ বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, এখন আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল, যারা নিজেদের দাবি করে দেশের স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে, তারাও বাংলাদেশের মানুষের একদিকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করছে, অন্যদিকে জনগণের পকেটের পয়সা কেটে লুট করছে।’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশের মানুষ কষ্টে আছে, চিকিৎসা পায় না। হাসপাতালগুলোতে কোনও চিকিৎসা নেই। অন্যদিকে সরকার দলের নেতা, নেত্রী, মন্ত্রীরা বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কানাডাতে ‘বেগম পাড়া’ নামে একটি এলাকা হয়েছে, যেখানে এই সরকারের লোকেরা বাড়িঘর তৈরি করেছেন। এ কথা আমরা বহুবার বলেছি।’’ ‘এর থেকে মুক্তির একমাত্র পথ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা’, উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটিমাত্র পথ আছে মুক্তির, যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে, তাদের সরিয়ে দিয়ে জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা।’
তিনি বলেন, ‘জীবন ও জীবিকার প্রতি যাদের কোনও দায়িত্ব নেই, তাদের দিকে তাকিয়ে থেকে বাংলাদেশের অগণিত মানুষ করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাবে না।’ ‘কতটা দায়িত্বহীন হতে পারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা। কতটা উদাসীন সরকার’, বলে বিস্ময় প্রকাশ করেন ফখরুল। ন্যূনতম দায়িত্ব পালনেও সরকার ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেন তিনি। ‘সরকারের চরম অবহেলা, অবজ্ঞা, অজ্ঞানতা আর একটাই লক্ষ্য- চুরি। সে কারণেই করোনাভাইরাস বাংলাদেশে এ অবস্থায় এসে পৌঁছেছে’, বলে দাবি করেন ফখরুল। ‘এই দুঃসময়ে ত্রাণ চুরি করছে, বরাদ্দ চুরি করছে, মাস্ক-স্যানিটাইজারের বরাদ্দের টাকাও তারা চুরি করছে’, মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। রিজেন্ট হাসপাতাল কোনও পরীক্ষা না করেই করোনার ফলাফল দিচ্ছে। সমগ্র বিশ্বে এই বিষয়টি সমালোচিত হচ্ছে। বড় রকমের প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়বে, বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আর এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকারের।’
মির্জা ফখরুল তার আলোচনায় প্রয়াত নেতা এম এ হককে সিলেটের জনগণের আপন মানুষ ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেন। এম এ হককে স্মরণ করে ভার্চুয়াল সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এম এ হক সিলেট বিএনপির গঠন ও পুনর্গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সর্বশেষ সিলেটে জনসভা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তত্ত্বাবধানে সিলেটে নতুন আঙ্গিকে করোনাসেবা শুরু হতে যাচ্ছে। এই কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। শহীদ জিয়ার গড়া দল জনগণের পাশে আছে, যুগযুগ ধরে আছে। তারই প্রমাণ এই কর্মসূচি।’
ভার্চুয়াল সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপি নেতা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সহমুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলি আহমদ। সভাপতিত্ব করেন সিলেটের সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি ডা. শামীমুর রহমান। বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, গত ৩ জুলাই চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সিলেট জেলা, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ হক মারা যান। মৃত্যুর পর তার করোনা পজিটিভ রেজাল্টের খবর পাওয়া যায়।