বিপদের বাতাস খুলনা যশোরে

0

কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের মহামারীর চুড়ান্ত রূপ এখন বিরাজ করছে বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকাসহ সব জেলায় কমবেশি করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হলেও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে যশোর ও খুলনায়। প্রতিদিন এই দুই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দৈনিক গড়ে অর্ধশতহারে আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে যশোরেই। শনাক্তের তালিকায় যশোর প্রায় দিনই উপরের সারিতে থাকছে। এরমধ্যে গত দু’দিনে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় একশ’ জন। এ নিয়ে যশোরে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪০ জন ছিল। এই সময়ে মারা গেছে ১৬ জন। মাঝে দু’দিন পরীক্ষা বন্ধ ছিল।
যশোরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে শঙ্কা প্রকাশ করে স্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রায়ই দিনইং বেশ বড় বড় খবর প্রকাশ করছে। খুলনার পত্রিকাতেও একই রকম খবর হচ্ছে। এতে স্পষ্ট হয় আসলেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কারণ এখানে প্রতিদিন যত সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীা করা হচ্ছে তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশই করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে। শনাক্তের এই হার হিসাব করলে খুলনা ও যশোরের বাস্তব অবস্থা অনুমান করা যায়। দেড়শো জন মানুষের নমুনা পরীায় যদি ৪২ থেকে ৬০ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয় তাহলে বিভাগের অর্ধকোটি মানুষের নমুনা পরীার ফলাফল কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটাই আসলে শঙ্কার বিষয়। আমরা যতদূর জেনেছি, তাতে খুলনা ও যশোরের কোনো উপজেলা বা পৌর এলাকা করোনামুক্ত নয়। কেসিসিরসব ওয়ার্ডের অবস্থা ভয়াবহ। যেখানেই নমুনা নেয়া হচ্ছে সেখানেই করোনা শনাক্ত হচ্ছে। ফলে অধিক পরীক্ষার প্রয়োজন। কিন্তু কোথাও এখনো প্রয়োজনীয় বা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীার ব্যবস্থা হয়নি। ফলে বিপদের আশঙ্কা বেড়ই যাচ্ছে। ইতোপূর্বে আমরা এমন শঙ্কা প্রকাশ করে অধিক হারে পরীার প্রয়োজনের কথা বলেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য নানা সমস্যা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তেমন উদ্যোগ নেননি। এখনো যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৩০ জনের বেশি নমুনা নিচ্ছে না। ফলে আক্রান্ত অনাক্রান্ত চিহ্নিত না হওয়ায় মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে সব। এই অবস্থা অবশ্যই মারাত্মক বিপদের বার্তা দিচ্ছে।
আমরা মনে করি, এখনো বিপদ মুক্তির প্রধান পথ হচ্ছে শনাক্ত। যত শনাক্ত হবে ততই চিকিৎসা বাড়বে। আক্রান্তদের চলাচল সীমিত হবে। মানুষ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে পারবে। এসবের ফলাফল অবশ্যই জনগণের নিরাপত্তার জন্য পজিটিভ হবে। আমরা তাই আবারও বলছি, কোনো অজুহাতে বিলম্ব নয়। যে কোনো মূল্যে অধিকহারে পরীার মাধ্যমে আক্রান্ত অনাক্রান্ত পৃথক করে খুলনা বিভাগকেই নিরাপদ করুন। মানুষকে আতঙ্কমুক্ত করুন। মনে রাখতে হবে, সামনে ঈদুল আযহা। মানুষ যে কোনো মূল্যে ঘরে ফিরবে। নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে ঘরে ঘরে। সময় থাকতেই তাই প্রস্তুতি নিতে হবে।