বেনাপোলে আমদানি-রফতানি শুরু

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রবিবার থেকে আবারো যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বাংলাদেশি পাঁচ ট্রাক পণ্য নিয়ে ভারতে প্রবেশের মাধ্যমে রফতানি কার্যক্রম চালু হলো। আজ সোমবার থেকে পুরোদমে চলবে দু দেশের আমদানি-রফতানি। ভারতীয় কর্তৃপ রফতানি পণ্য না নেয়ায় গত ১ জুলাই থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকরা এক হয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন আমদানি বাণিজ্য। গত ১শ দিনে বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্যচালান ভারতে রফতানি হয়নি। অথচ লকডাউনের ৭৭ দিনের মাথায় ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে আসা শুরু হয়। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ২২ মার্চ এই দুই বন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে দুই দেশের বন্দর, কাস্টমস, বন্দর ব্যবহারকারীরা দফায় দফায় বৈঠকের পর গত ৭ জুন সীমান্ত বাণিজ্য সচল হয়। এরপর থেকে ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে আসছে। কিন্তু ওই সময়ে বাংলাদেশি কোনো পণ্যচালান ভারতে রফতানি হয়নি।
বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলছেন, করোনা সংক্রমণের শঙ্কায় ‘নিরাপত্তাজনিত’ কারণ দেখিয়ে ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্য নিচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা একতরফাভাবে বাণিজ্য বন্ধ করেছি। শেষমেষ রবিবার বিকেল থেকে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি শুরু হয়েছে। দেশে স্থলপথে যে রফতানি হয় তার প্রায় ৭০ শতাংশ ভারতে যায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। প্রতি বছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার নয় হাজার টন বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি হয়। কিন্তু ভারত থেকে পণ্য আসে এর বহুগুণ।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, করোনার মধ্যে আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর গত ৭ জুন থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়। এ সময় ভারতে প্রবেশের অপোয় বেনাপোল বন্দরে দুই শতাধিক ট্রাক রফতানিযোগ্য পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রোদ, বৃষ্টিতে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হচ্ছে তেমনি ব্যবসায়ীদের লোকসানের পাল্লাও ভারী হচ্ছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা স্থলপথে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রফতানি বাণিজ্য সচলের জন্য বার বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আমদানিতে ‘হ্যাঁ’ বললেও রফতানিতে ভারতীয় কর্তৃপ ‘না’ বলেই চলেছে। আমদানি উন্মুক্ত হওয়ার পর গত ৭ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ভারত থেকে চার হাজার ২০০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। অথচ একটি রফতানি ট্রাকও গ্রহণ করেনি ভারতীয় কর্তৃপ। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আমদানি রফতানি বন্ধ করলে টনক নড়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের। বেনাপোল কাস্টম কিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় ২২ মার্চ থেকে আমদানি-রফতানি বন্ধ ছিল। ৭ জুন থেকে আবার আমদানি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশি পণ্য রফতানি বন্ধ থাকায় ২৪ জুন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিব আলাপন ভট্টাচার্যের কাছে আমরা চালুর ব্যাপারে আবেদন করেছি। এই বন্দর দিয়ে রফতানি চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তিগ্রস্ত হচ্ছেন। পরে আমরা বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ রাখলে রবিবার থেকে রফতানি পণ্য গ্রহণ করছে ভারত। আশা করছি আজ সোমবার থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর পুরোপুরি সচল হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল কাস্টমের অতিরিক্ত কমিশনার ড. সৈয়দ নিয়ামুল ইসলাম। তিনি জানান, রবিবার বিকেলে পাঁচটি পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে রফতানি হয়েছে। সন্ধ্যার পর কিছু আমদানিবাহী পণ্যট্রাক প্রবেশ করবে। এখন থেকে দু দেশের বাণিজ্য কার্যক্রম চলবে সমান গতিতে।