ইমু হত্যাকাণ্ড : দু’সপ্তাহেও আটক হয়নি মূলহোতা দুর্জয়সহ ৭ সন্ত্রাসী

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর উপশহরে সৈয়দ এহসানুল হক ইমু হত্যাকান্ডে জড়িত সন্ত্রাসী দুর্জয়সহ আরও ৭ জন এখনো আটক হয়নি। এরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে তাদেরকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই। তারা ইতিমধ্যে এই হত্যাকান্ডে জড়িত আল-শাহরিয়ার ও শাহিন সরদার নামে দুই সন্ত্রাসীকে আটক করেছে। আটকের পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। উঠতি এই দুই সন্ত্রাসীর দেয়া জবানবন্দি থেকে হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়।
উপশহর বি-ব্লকের বাসিন্দা সৈয়দ ইকবাল হোসেন ইকুর ছোট ছেলে সৈয়দ এহসানুল হক ইমু গত ২১ জুন রাতে শিশু হাসপাতালের সামনের রয়েল টি স্টল নামে একটি চায়ের দোকানে খুন হন। দু দল মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীর মারামারি ঠেকাতে গিয়ে তিনি খুন হন। এই হত্যাকান্ডের সাথে পুরাতন কসবা এলাকার মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীরা জড়িত বলে দৈনিক লোকসমাজে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে সৈয়দ এহসানুল হক ইমু খুনের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হলেও জড়িত সন্ত্রাসীদের আটক বা ধরতে পারেনি থানা পুলিশ। এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন থানা পুলিশের এসআই কামাল হোসেন। তবে মামলাটি থানা পুলিশের কাছ থেকে চলে যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। বর্তমানে ইমু হত্যা মামলা তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের এসআই ¯েœহাশিস দাশ। তিনি ২৩ জুন রাতে শহরের পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ার বাড়ি থেকে আটক করেন ইমু হত্যাকা-ে জড়িত আল-শাহরিয়ার নামে একজন উঠতি সন্ত্রাসীকে। সে ওই এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে পিবিআই তাকে আটকের পর ইমু হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়। উপশহরস্থ শিশু হাসপাতালের বিপরীতের ওই চায়ের দোকানে পূর্ব বিরোধের জের ধরে শাকিল নামে এক যুবককে মারধর করছিল পুরাতন কসবার উঠতি সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী দুর্জয়। তাদের এই গোলাযোগ ঠেকাতে গিয়ে ইমু সন্ত্রাসী দুর্জয়কে চড় মেরেছিলেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পুরাতন কসবা এলাকা থেকে সহযোগী সন্ত্রাসীদের ডেকে এনে ইমুকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্জয়।
আটক আল-শাহরিয়ারকে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে হত্যাকা-ে জড়িত ৯ সন্ত্রাসীর নামও প্রকাশ পায়। আল-শাহরিয়ার ছাড়াও এই হত্যার সাথে মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী দুর্জয়, শাহিন সরদার, মাসুদ, ইয়াসিন, আসিফ, সোহাগ, বাবু ও সুইট। এরপর পিবিআই ২৫ জুন রাতে শাহিন সরদার নামে আরও এক সন্ত্রাসীকে আটক করে, সে ওই হত্যা মিশনে অংশ নিয়েছিল। শাহিন সরদার পুরাতন কসবা আমবাগান এলাকার হাশেম সরদারের ছেলে। তার স্বীকারোক্তিতে পুুরাতন কসবা বিধুভূষণ রোডস্থ শিশু অ্যাকাডেমির অভ্যন্তর থেকে দুটি হাসুয়া উদ্ধার হয় সেই সময়। অবশ্য শাহিন সরদারও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এদিকে একাধিক সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর ইমু হত্যার মূলহোতা দুর্জয়সহ তার সহযোগীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে। অথচ তাদের আটক করা হচ্ছে না। তারা ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় অবস্থানের কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীরা মাদক ব্যবসা ছাড়াও নানা অপরাধের সাথে জড়িত। পিবিআইয়ের একটি সূত্র জানায়, ইমু হত্যাকা-ের সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের প্রধান আড্ডাস্থল বিধুভূষণ রোডস্থ শিশু একাডেমিকে ঘিরে। কিন্তু খুনের পর তারা আত্মগোপনে রয়েছে। ইমু হত্যাকা-ের দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত প্রধান অভিযুক্ত সন্ত্রাসী দুর্জয়সহ আরও ৭ জনকে আটক করতে পারেনি পিবিআই। এ বিষয়ে সংস্থাটির যশোর ইউনিট ইনচার্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তারা ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছেন। অন্যদেরও আটকের জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।