ঝিকরগাছার দুই যুবককে লিবিয়ায় পাচার ও মুক্তিপণ আদায়,আটক ১

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাঠশিয়া গ্রামের দুই যুবককে লিবিয়ায় পাচার মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার থানায় মামলা হয়েছে। ৩ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন মাঠশিয়া গ্রামের মৃত সোনাই মল্লিকের ছেলে সিরাজ মল্লিক। পুলিশ জাহানারা বেগম নামে মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে আটক করেছে। তিনি মাঠশিয়া গ্রামের ফারুক সরদারের স্ত্রী। মামলার অপর দুই আসামি হচ্ছেন-আটক জাহানারা বেগমের স্বামী ফারুক সরদার ও শ্বশুর ফজলে সরদার।
বাদী সিরাজ মল্লিকের অভিযোগ, মাঠশিয়া গ্রামের ফজলে সরদারের ছেলে ফারুক সরদার লিবিয়ায় থাকেন। ফারুক সরদারের স্ত্রী জাহানারা বেগম ও পিতা ফজলে সরদার তার (সিরাজ মল্লিক) ছেলে আরাফাত ওরফে নুরুন্নবী (২১) ও ভাগ্নে রুবেলকে (২১) ভালো কাজের ভিসা দিয়ে লিবিয়ায় পাঠাতে পারবেন বলে জানান। এ জন্য তারা দুজনকে পাঠানো বাবদ ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় তাকে বলা হয়, নুরুন্নবী ও রুবেল লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর তারা টাকা নিবেন। ফলে তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে তিনি ছেলে নুরুন্নবী ও ভাগ্নে রুবেলকে জাহানারা বেগম ও ফজলে সরদারের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ২৪ মে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দেন। নুরুন্নবী ও রুবেল লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর তিনি জাহানারা বেগম ও ফজলে সরদারকে ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকাও প্রদান করেন। কিন্তু লিবিয়ায় পৌঁছানোর ২৭ দিন পর সেখানে জাহানারা বেগম তাকে ফোন করে জানান যে, সেখানে মাফিয়ারা তার ছেলে ও ভাগ্নেকে আটকে রেখেছেন। ২০ লাখ টাকা না দিলে তারা তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। লিবিয়া থেকে ইমো এর মাধ্যমে পাঠানো একটি ভিডিও চিত্র এ সময় তাকে দেখানো হয়। ভিডিওতে নুরুন্নবী ও রুবেলকে মারধরের দৃশ্য রয়েছে। এর ফলে তারা সন্তানদের বাঁচাতে বিভিন্ন মাধ্যমে লিবিয়ায় অবস্থানরত ফারুক সরদারের কাছে কয়েক দফায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এরপরও নুরুন্নবী ও রুবেলের ওপর অত্যাচার বন্ধ হয়নি। বাকি সাড়ে ১১ লাখ টাকা পাঠাতে না পারায় ফারুক সরদার ও তার সহযোগীরা লিবিয়ায় আটকে রেখে জোরপূর্বক কাজ করতে বাধ্য করছে। আর তাদের পারিশ্রমিকও নিয়ে নিচ্ছেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, উল্লিখিত ঘটনায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হওয়ায় তারা এজাহারভুক্ত আসামি জাহানারা বেগমকে আটক করেছেন। শুক্রবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।