বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি হলেও এখনো বন্ধ বাংলাদেশি পণ্য রফতানি

0

নাভারণ (যশোর) সংবাদদাতা ॥ দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে এখনো চালু হয়নি ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি কার্যক্রম। এ নিয়ে বন্দর ব্যবহারকারীদের কয়েক দফা বৈঠক হলেও সফলতা আসেনি। করোনাভাইরাসের কারণে গত ২২ মার্চ থেকে এই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে স্থানীয়ভাবে দু’দেশের বন্দর, কাস্টমস, বন্দর ব্যবহারকারীদের দফায় দফায় বৈঠকের পর ৮ জুন থেকে সীমান্ত বাণিজ্য সচল হয়। কিন্তু এরপর থেকে শুধুমাত্র ভারতীয় পণ্য এলেও বাংলাদেশি কোনো পণ্য ভারতে রফতানি হয়নি। বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন, তিন মাস ধরে এই বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানি বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বৈঠক করে রফতানি কার্যক্রম চালুর চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়।
বেনাপোল কাস্টম কিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ২২ মার্চ থেকে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে গত ৮ জুন থেকে আবার আমদানি শুরু হয়েছে। তবে এই বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানি চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশি পণ্য রফতানি বন্ধ থাকায় ২৪ জুন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মূখ্য সচিব আলাপন ভট্টাচার্যের কাছে চালুর ব্যাপারে আবেদন করা হয়েছে। সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন দেড়’শ থেকে দু’শ ট্রাক পণ্য ভারতে রফতানি হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশি রফতানি পণ্যের বড় বাজার প্রতিবেশী দেশ ভারত। প্রতি বছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা মূল্যের পণ্য ভারতে রফতানি হয়। অবশ্য ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয় এর থেকে বেশি। এখন ভারত থেকে পণ্য আসছে অথচ ওরা বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিচ্ছে না। এতে বৈষম্য আরো বেড়ে যাচ্ছে। ইন্দো-বাংলা চেম্বার অব কমার্স সাব কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, এ বছর ১০ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তা থমকে গেছে। রফতানি বাণিজ্য সচলের জন্য ভারতীয় কর্তৃপরে সাথে সবধরনের প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় আমদানি শুরু হয়েছে সে প্রক্রিয়ায় যেন রফতানি চালু হয়’ সেই বিষয়টি পেট্রাপোল বন্দরকে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রফতানি চালু করতে কোনো অসুবিধা দেখছি না। রফতানি বাণিজ্য সচলের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই রফতানি কার্যক্রম শুরু হবে। উল্লেখ্য, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে সাধারণত ওভেন গার্মেন্টস, নিটেড গার্মেন্টস, নিটেড ফেব্রিকস, চিংড়ি মাছ, বিভিন্ন ধরনের সাদা মাছ, কাঁচা পাট, পাটজাত দ্রব্য (পাটের ব্যাগ, পাটের সুতা, চট), টিস্যু, সুপারি, ধানের কুড়া, ফোট গাস, ব্যাটারি, জিংক পেট, সিরামিক টাইলস, সাবান, হাঁড়ের গুঁড়া, কাঁচা চামড়া, প্রক্রিয়াজাত চামড়া, ওষুধ, সবজি, ফল, চা, পেট্রোলিয়াম বাই প্রোডাক্ট, হস্তশিল্পজাত দ্রব্য ও সিমেন্ট রফতানি হয়।