আমিরের জবানবন্দি : ‘হুমকি দেওয়ার পর শামিরুলসহ কয়েকজন রাসেলকে হত্যা করে’

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘মোটরসাইকেল দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাচ্ছিল শামিরুলসহ কয়েকজন। তাদের আস্তে যাওয়ার কথা বলার কারণে রাসেলকে হুমকি দেয়া হয়। এর ঘন্টাখানেক পর শামিরুলসহ কয়েকজন এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাসেলকে কুপিয়ে হত্যা করে। ভাইকে রক্ষা করতে গিয়ে এ সময় আহত হন আল-আমিন।’ আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন যশোর সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়ার আলোচিত সাব্বির আহমেদ রাসেল হত্যা মামলার আসামি আমির হোসেন। জবানবন্দিতে তিনি হত্যা মিশনে অংশ নেয়া কয়েকজনের নামও প্রকাশ করেন।
আমির হোসেন সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া শ্মশানপাড়ার মৃত ইদ্রিস আলী ওরফে মাদ্রাজের ছেলে। গত বুধবার তিনি অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আকরাম হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সাব্বির আহমেদ রাসেল হত্যাকা-ের বিষয়ে জবানবন্দিতে আদালতকে আমির হোসেন বলেছেন, প্রায় দু’মাস আগে সন্ধ্যার পরপরই তিনি গ্রামের জনৈক রবিউল ইসলাম বাবুর দোকানে বসেছিলেন। একই গ্রামের আবু সালেক মৃধার ছেলে রাসেলও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তাদের গ্রামের মেম্বার চায়না খাতুন ত্রাণের টাকা বিতরণ করছিলেন। এ সময় তাদের মহল্লার ছেলে শামিরুল, সানু, সাগর ও পিচ্চি বাবু মোটরসাইকেলে খুব দ্রুতগতিতে সেখান দিয়ে যেতে থাকে। ফলে রাসেল তাদেরকে আস্তে যাওয়ার জন্য বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শামিরুল তাকে হুমকি দিয়ে বলে ‘তোর একদিন নয়তো আমার একদিন। আমি তোকে দেখে ছাড়বো’। এর ঘন্টাখানেক পর একই গ্রামের সেলিম, সানু, সোহাগ ও সোহেল ওই দোকানের সামনে আসে। কিছুক্ষণ পর সাগর, শামিরুল, পিচ্চি বাবু, শান্ত, মোস্ত, আশিক, আজাদ, ইনামুল এবং হাসিব মাঠ দিয়ে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে আসে। তারা এসেই রাসেলকে ধরে স্থানীয় ঈদগায়ের ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। এরপর সেখানে তারা রাসেলকে কুপিয়ে হত্যা করে। ভাইকে ঠেকাতে গেলে হামলাকারীরা আল-আমিনকে (রাসেলের ভাই) কুপিয়ে জখম করে। কিন্তু এরপর আর কী হয়েছে তা জানেন না আমির হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল রাতে নিজ বাড়ির কাছে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন সাব্বির আহমেদ রাসেল। এ ঘটনায় তার পিতা আবু সালেক মৃধা সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহীদুজ্জামান শহিদসহ ২৪ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। আমির হোসেন এ মামলার এজাহারভুক্ত ১৪ নম্বর আসামি। গত ২৩ জুন গভীর রাতে ঝিকরগাছা উপজেলার পুরন্দপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরদিন বুধবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে পিচ্চি বাবু ও সোহাগ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল।