খুলনায় করোনার উপসর্গে শিক্ষকসহ ৫ জনের মৃত্যু

0

মো. জামাল হোসেন, খুলনা ॥ খুলনায় করোনার উপসর্গ নিয়ে একজন শিক্ষকসহ আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার রাতে ও গতকাল বৃহস্পতিবার ভিন্ন ভিন্ন সময় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা সাসপেকটেড আইসোলেশন ওয়ার্ডের ফু কর্নারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা। এ নিয়ে খুলনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে, মৃতদের করোনা পরীক্ষায় নমুনা সংগ্রহে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিরা হলেন-নগরীর খালিশপুরস্থ বয়রা মধ্যপাড়ার ফিরোজা মঞ্জিলের মৃত আব্দুর রব মিয়ার পুত্র ও খুলনা সরকারি জিলা স্কুলের শিক্ষক মাওলানা মো. জান্নাতুল ফেরদৌস (৪০), নগরীর বাগমারা এলাকার সোহরাব শেখের পুত্র হারুন শেখ (৫৫), হরিণটানার রায়েরমহল এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের পুত্র মো. বাবু (৪৫), জোড়াগেট এলাকার মৃত হাফেজ আলীর পুত্র সরোয়ার হোসেন (৫০) ও টুটপাড়ার শংকর পাড়া রোড এলাকার মৃত. মতিউর রহমানের পুত্র মুজিবুর রহমান (৬২)। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ও করোনা ওয়ার্ডের মুখপাত্র ডা. মিজানুর রহমান জানান, শিক্ষক মাওলানা মো. জান্নাতুল ফেরদৌস জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বুধবার রাত ১২ টার পর খুমেক হাসপাতালের ফু কর্নারে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১ টা ৫ মিনিটে মারা যান তিনি। হারুন শেখও জ্বর, কাশির সমস্যা নিয়ে বুধবার বিকেলে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১ টা ২০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া মো. বাবুও জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৩ জুন) বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফু কর্নারে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত ৪ টা ৫ মিনিটে মারা যান তিনি। এছাড়া মুজিবুর রহমান তিনদিন ধরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুমেক হাসপাতালের আইসোলেশনে ওয়ার্ডে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনি মারা যান। একই ভাবে মো. সরোয়ার হোসেন ৩/৪ দিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুমেক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে, রাতের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে মৃত্যুবরণকারী তিনজনের নমুনা সংগ্রহে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। এমনকি রাতে সাসপেকটেড আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে তাদের মৃতদেহও সরানো হয়নি, বেডেই পড়ে ছিল। মৃতদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, রাতেই তাদের নমুনা নেয়ার জন্য বলা হলে কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার ডা. অসীম জানান ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু গতকাল দীর্ঘ বেলা পর্যন্ত তাদের নমুনা নেয়া হয়নি। বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালককে জানালে তিনি বলেন, ‘এখন নমুনা নিয়ে লাভ নেই’। বিষয়টি স্বীকার করে খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দার বলেন, তিনি রাতে ডিউটি ডাক্তারকে নমুনা নিতে বলেছিলেন। কিন্তু তারপরও ডাক্তার নমুনা নেননি। এ কারণে তাকে শোকজ করা হবে।