আক্রান্ত আরও ২৪ জন : যশোরে করোনা ওয়ার্ড হাসপাতালের সামনে স্থানান্তর : ঝুঁকির মুখে মানুষ

0

বিএম আসাদ ॥ মহামারী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) গ্রাস করেছে যশোরকে। গতকাল যশোরে আরও ২৪ জন নতুন করে কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে যশোরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪শ’ ৩৫ জন। মারা গেছেন ৫ জন। এদিকে, যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের প্রবেশমুখে (সামনে) করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড স্থানান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও সাধারণ মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়েছেন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানিয়েছেন, যশোরে কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গেছে। করোনায় গ্রাস করেছে যশোরকে। গতকাল যশোরে কোতয়ালি থানার এসআই, ব্যাংকার, সেবিকা, স্বাস্থ্যকর্মী, কারারক্ষী, ব্যবসায়ীসহ ২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যশোর সদর উপজেলায় আক্রান্ত ১৬ জনের সকলেই শহরে বসবাস করেন। আক্রান্তরা হচ্ছেন- যশোর কোতয়ালি থানার এসআই মতিয়ার রহমান (৪৫), কেন্দ্রীয় কারাগারের রক্ষী কামরুজ্জামান (৪৭), যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স, শহরে বেজপাড়ার ব্রাদার্স ঝুমুর বিশ্বাস (৪০), একই হাসপাতালের কর্মী তারক চন্দ্র বিশ্বাস (৫০), শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত বেজপাড়ার সরস্বতী রাণী (৪০), এনজিও কর্মী মোস্তাক আহমেদ (৫৫), বেজপাড়ার বিধান সাহার স্ত্রী স্মৃতি সাহা (৪২), তার পুত্র কলেজছাত্র দিপ্ত সাহা (১৯) বেজপাড়ায় মা ও ছেলেসহ আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন। আক্রান্ত অন্যরা হলেন ওষুধ কোম্পানি রেনেটা ফার্মাতে চাকরিরত পুরাতন কসবা টালিখোলার রুবেল হোসেন (৩৫), সেলিম হোসেন (৩০), একই কোম্পানিতে কর্মরত আরবপুরের মিন্টু বিশ্বাস (৪০), পুরাতন কসবার মহিদুল ইসলাম (৪০), যশোর আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত আরএন রোডের শিমুল (২৫), চাঁচড়া রায়পাড়ার ব্যবসায়ী নাসিমুল (৫৫), পুলেরহাটের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন (৪৫), বাঘারপাড়ার দেবেননগর গ্রামের নিতাইপদ সুর (৫৫), ইসলামী ব্যাংক অভয়নগর শাখায় কর্মরত বাঘারপাড়ার বহরমপুরের খলিলুর রহমান (৩৯), চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী, বেনাপোলের আবুল কাশেম (৫৫)। চৌগাছা পুরাতন হাসপাতালপাড়ার লন্ড্রি আনিছের স্ত্রী ঝর্না (৩৫), ঝিকরগাছা সোনালী ব্যাংকে কর্মরত, শহরের টালিখোলা এলাকার শাহজাহান কবীর (৫৬), ঝিকরগাছা কুলবাড়ীয়া গ্রামের গৃহবধূ রওশন আরা (৫৬), মনিরামপুরের মিলন কুমার বিশ্বাস (৫৩), যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শার্শার কৃষক মমিনুর রহমান (৬০) ও শার্শার নাভারণের ব্যবসায়ী আশরাফুর রহমান (৫০)। আক্রান্তদের ভেতর মিলন কুমার হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে যশোর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪শ’ ৩৫ জন। উপজেলা ভেদে অভয়নগরে মোট ১শ’ ১৯ জন, বাঘারপাড়ায় ১২ জন, চৌগাছায় ২৩ জন, যশোর সদরে ১শ’ ৩০ জন, ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ৩৩ জন, ঝিকরগাছায় ২৩ জন, কেশবপুরে ৩৪ জন, মনিরামপুরে ১৯ জনসহ শার্শায় ৪১ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনা ভাইরাসে। এ দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- যশোর সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামের ওহাব আলী, শার্শা উপজেলার জাকির হোসেন, অভয়নগরের আমির হোসেন, বেল্লাল হোসেন ও আনিছুর রহমান। নতুন করে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য গতকাল যশোর সিভিল সার্জন অফিস ১শ’ ২০টি নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠিয়েছে। গত ২৪ জুন থেকে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড হাসপাতালের প্রবেশমুখে পূর্বের অর্থোসার্জারি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওয়ার্ডটি স্থানান্তর করার কারণে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। এতোদিন করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড ছিল হাসপাতালের পেছনে এবং ৩য় তলায়। এতে সাধারণ রোগী নির্বিঘেœ হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারতেন। এ নিয়ে হাসপাতালের কর্মরত ও সাধারণ মানুষের ভেতর ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।