সরকার অন্ধকারে কালো বিড়াল খুঁজছে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, চিকিৎসা খাতে সরকারের আরো করণীয় আছে। এ খাতে দুর্নীতি বন্ধ না হলে সামনে ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে। করোনামুক্ত হয়ে গতকাল প্রথম গণমাধ্যমের সামনে আসেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তিনি বলেন, করোনা সমস্যাটা কিভাবে সমাধান করবে, সেটা সরকারের চিন্তার মধ্যে নেই। করোনা থেকে রোগ মুক্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিস্থ গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে গেরিলা কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দার বীর উত্তম মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এতে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারের কোন চিন্তা-ভাবনা নেই। এখনো মূল প্রবাহ আসেনি। আসবে এ মাসের পরে। যখন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, জাতীয় ওষুধ নীতির নিয়ম বদলালে ওষুধের দাম অর্ধেক হবে। এজন্য সুস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দরকার। জনগণ দাবি ওঠানো ছাড়া এটা সম্ভব না। এর পরিবর্তনের জন্য জনগণের পক্ষ থেকে আওয়াজ আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা এবং সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেয়ায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রোগ মুক্তিতে সহায়ক হয়েছে উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্যের চিকিৎসক ডা. মুহিবুল্লাহ খোন্দকার বলেন, ভাই (ডা. জাফরুল্লাহ) আমাদের বলেছেন, দুই নেত্রী তার খোঁজ খবর নেয়ায় ওনি মানসিক শক্তিও পেয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন চিকিৎসকরা ওনার খোঁজ খবর নিয়েছেন। এছাড়া এই দেশের অগণিত মানুষ আমাদেরকে ফোন দিয়ে ওনার স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিয়েছেন।
গণস্বাস্থ্যের আরেক চিকিৎসক ডা. মামুন মোস্তাফি বলেন, ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বুকের প্রায় ৮০ ভাগ অংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গেছে। এটার কারণেই যতো ধরণের সমস্যা হয়েছে। এরমধ্যে ওনার রক্তক্ষরণ হয়েছে, হৃদক্রিয়ায় সমস্যা হয়েছে। তিনি সব সময় সবার কথা শুনেন না। ওনার নিজস্ব একটা থিওরি আছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, দেশের একটা শ্রমিক, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ যে ওষুধটা কিনতে পারবে না সে ওষুধ তিনি তার চিকিৎসায় ব্যবহার করেননি। তিনি আরও বলেন, আপনার শুনে অবাক হবেন, করোনা ডায়ালাইসিস করতে সিটিস্ক্যান ছাড়া কেউ সেটা করেন না। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওনার ডায়ালাইসিস করতে সিটি স্ক্যান করতে পারিনি। কারণ ওনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই আমাদের বলেছেন, দেশের সাধারণ মানুষ কি সিটিস্ক্যান করতে পারবে? টাকার জন্য যদি সাধারণ মানুষ সিটি স্ক্যান করতে না পারে তাহলে আমার জন্যেও এই টাকার খরচ করার দরকার নাই। ওনার চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও তিনি সেখানে ভর্তি হওয়ার জন্য রাজি হননি। তিনি শুধু একটা কথাই বলেছেন, মরলে আমি এখানেই মরবো। সত্যি কথা বলতে কি, আল্লাহর রহমত এবং ওনার যে মানসিক শক্তি এই রোগ সেরে ওঠতে সেটা অনেকটাই কাজে দিয়েছে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আরেক চিকিৎসক ডা. নাজিব রাজাক বলেন, ওনার ফুসফুসে একসাথে দুইটা নিউমোনিয়া ছিল। একটা ছিল করোনা ভাইরাসের নিউমোনিয়া, আরেকটা ছিল ব্যাকটেরিয়াস নিউমোনিয়া। একটার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে কিন্তু ব্যাকটেরিয়া নিউমোনিয়াটা নিয়ে এখনো শঙ্কা রয়েছে। তিনি এখানে বসে আছেন। তাকে দেখতো পুরোপুরি সুস্থ মনে হলেও তিনি শতভাগ রোগমুক্ত নন। আলোচনা সভায় আরও অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের আহ্‌বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ড. বিজন কুমার শীল, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।