ইমু খুনের ঘটনায় পুরাতন কসবার উঠতি সন্ত্রাসী চক্র জড়িত, আটক হয়নি কেউ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের উপশহরে সৈয়দ এহসানুল হক ইমু হত্যাকান্ডের সাথে পুরাতন কসবা লিচুবাগান এলাকার একটি সন্ত্রাসী চক্র জড়িত। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এমনই তথ্য মিলেছে। তবে হত্যাকান্ডে জড়িত কাউকে গতকাল পর্যন্ত আটক করতে পারেনি পুলিশ। অপরদিকে রয়েল হোসেন নামে ঘটনাস্থলের এক চা দোকানিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। তার চায়ের দোকানে সৈয়দ এহসানুল হক ইমুকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
উপশহর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই এইচ এম এ লতিফ জানান, গত রোববার রাতে উপশহরের বি-ব্লকের সৈয়দ ইকবাল হোসেন ইকুর ছেলে ইমু সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হওয়ার পর তারা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন, ইমু ছুরিকাঘাতে খুন হননি। তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, রোববার রাতে উপশহরস্থ শিশু হাসপাতালের সামনের রয়েলের চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় সেখানে উঠতি বয়সের ৪টি ছেলে কোন একটি বিষয় নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। ইমু তাদের মারামারি ঠেকাতে গিয়ে একজনের মুখে চড় মারেন। এতে ওই ছেলের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে যায়। এ ঘটনার পর তারা সেখান থেকে চলে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ৩টি মোটরসাইকেলে করে উল্লিখিতরা আরও কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে ফিরে আসে। তারা এ সময় ইমুকে চায়ের দোকান থেকে অপহরণের চেষ্টা করে। কিন্তু আশেপাশের লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে সন্ত্রাসীরা ধারালো দা দিয়ে ইমুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দ্রুত মোটরসাইকেলে করে পুরাতন কসবার দিকে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ইমু খুন হওয়ার পর পুলিশ ওই রাতেই চা দোকানি রয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তার পাশের দোকানি শহিদুল ইসলাম জানান, রয়েলের চায়ের দোকান দিনের বেলায় বন্ধ থাকে। তবে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর রয়েল দোকান খোলেন। রাত অন্তত ১০টা পর্যন্ত চায়ের দোকান খোলা থাকে। ইমু নামে এক যুবক ওই চায়ের দোকানে খুন হওয়ায় পুলিশ রয়েলকে ধরে নিয়ে গেছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, রয়েল মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগে পলিটেকনিক ইনসটিটিউটের সামনে তার চায়ের দোকান ছিলো। সেখান থেকে রয়েল একবার ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। সূত্র আরও জানায়, শিশু হাসপাতালের সামনে রয়েলের চায়ের দোকানে যারা চা পান করতে আসেন তাদের অধিকাংশ মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত। যারা ইমুকে হত্যা করেছে তারাও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকতে পারে। রয়েলের দোকানে তারা নিয়মিত উঠাবসা করে থাকে। ফলে রয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করা যেতে পারে। কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানান, ইমু খুনের ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোন এজাহার দাখিল করা হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আটকের জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত সোমবার প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদে নিহত যুবকের নাম এনামুল হক ইমু লেখা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার নাম সৈয়দ এহসানুল হক ইমু হবে।