চৌগাছায় আ.লীগ নেতা মেম্বার মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে উপজেলা পরিষদে মানুষ

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোর চৌগাছার হাকিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার আক্তারুজ্জামান মিলনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন ইউনিয়নবাসী। গরীব অসহায় মানুষের ঘাম ঝরানো টাকা আত্মসাতকারী এই নেতার শাস্তির দাবিতে ভুক্তভোগীরা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছেন। গতকাল রোববার দুপুরে অর্ধশত নারী-পুরুষ উপজেলা পরিষদে হাজির হয়ে এ অভিযোগ করেন।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য আক্তারুজ্জামান মিলন ৩/৪ বছর ধরে ইউনিয়নের শত শত নারী-পুরুষের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর অফিসে তার অপকর্ম তুলে ধরে একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ন চন্দ্র্র্র পাল তদন্তে যান। ওইদিন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে শত শত নারী-পুরুষ বিতর্কিত এই নেতার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার আশ^াসে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন। এই রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল (রোববার) দুপুরে ইউনিয়নের অর্ধশত হতদরিদ্র মানুষ উপজেলা পরিষদে উপস্থিত হয়ে মেম্বার আক্তারুজ্জামান মিলনের সুষ্ঠু বিচারের দাবি চেয়ে আরও একটি অভিযোগ করেন।
এ সময় কথা হয় ভুক্তভোগী হাকিমপুর গ্রামের কিনা দাসের স্ত্রী বিন্দে রানীর সাথে। তিনি বলেন. দু’বছর আগে বিধবা ভাতার একটি কার্ড দেয়ার নাম করে তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন মেম্বার আক্তারুজ্জামন মিলন। এ পর্যন্ত তিনি কোন কার্ড দেননি, এমনকি টাকাও ফেরত দেননি। টাকা ফেরত চাইলে তিনি প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। ইউনিয়নের মুক্তার হোসেনের ছেলে দিনমজুর সাজ্জাদ হোসেন। দিন আনা দিন খাওয়া এই ব্যক্তির কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকা নিয়েছেন মেম্বার মিলন। তাকে রাস্তায় মাটি কাটার লেবারের কাজে অন্তর্ভূক্তির কথা বলে টাকা এই টাকা নেয়া হয়। কিন্তু আজ অবধি তিনি কাজ অথবা টাকা ফেরত দেননি। একই অবস্থার শিকার হয়েছেন ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামের আনোয়ারা বেগম, যাত্রাপুর গ্রামের জোসনা রানী, একই গ্রামের স্বপ্ন রানী, সীতা রানী, মাঠ হাকিমপুর গ্রামের কৃষ্ণা রানী, একই গ্রামের পান্না রানী, কবিতা রানী, মমতা বালা, টুম্পা রানী, তাহেরপুর গ্রামের সালেহা বেগম, স্বরুপপুর গ্রামের নিরালা রানী, একই গ্রামের নারানী সর্দার। উপজেলা পরিষদ চত্তরে উপস্থিত এসব ব্যক্তি জানান, বিধবা, বয়স্ক, মাতৃত্বকালীন ভাতা, জন্ম নিবন্ধন, টিউবওয়েল দেয়া, লেবারের কাজ দেয়াসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন মেম্বার মিলন। তবে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি মেম্বার আক্তারুজ্জামান মিলন ইউনিয়নের সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের কাছ থেকে সব থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ সময় কথা হয় হাকিমপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে। তিনি জানান, মেম্বার মিলন দলের নাম ভাঙিয়ে হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে যেভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তা কারো কাম্য নয়। ইউনিয়নের ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিতে এসেছেন, তাই আমি ওদের সাহায্য সাথে এসেছি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেয়ার জন্য ইউপি মেম্বার আক্তারুজ্জামান মিলনের মোবাইল ফোনে (০১৭৩৯৯১৪৯১১) একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, লোকজন একটি অভিযোগ দিতে এসেছিলেন। সেটি সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে জমা দিতে বলেছি।’ সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ন চন্দ্র পাল বলেন, তার (মেম্বার) বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের তদন্ত গত বৃহস্পতিবার করেছি, তবে এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি। এরই মধ্যে আরও একটি অভিযোগ পেয়েছি, সেটিও তদন্ত করা হবে।’