আসামিদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার খাজুরার কলেজছাত্র নয়ন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খাজুরার কলেজছাত্র নয়ন দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন এমনটা নয়। আসামিদের পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার হন তিনি। পুনঃতদন্তে এমনটায় উঠে আসছে বলে ধারনা করছে তদন্তকারী সংস্থা। এদিকে মামলার তদন্তকারী সংস্থার তোড়জোড়ে আসামিরা মামলা মীমাংসা করে নেয়ার প্রাস্তাব দিচ্ছে নিহতের পিতাকে। কোন মীমাংসা নয়, ছেলে হত্যার বিচার চান শফিয়ার রহমান। ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই রাতের কোন এক সময় নয়ন নিহত হয়েছিলেন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের শর্শুনাদহ গ্রামের শফিয়ার রহমানের ছেলে ও খাজুরা সরকারি শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন নয়ন। প্রতিবেশী এক মেয়ের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের প্রেমকে তার পরিবার মেনে নিতে পারেনি। আসামি মাহাবুর রহমান তার ভাইঝির সাথে সম্পর্ক না রাখার জন্য নয়নকে হুমকি দেয়। ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই রাতে খেলা দেখে বাড়িতে এসে খাওয়া শেষে মোবাইল ফোনে কল আসলে নয়ন বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন সকালে বাড়ির পাশের একটি মুগরির ফার্মের পাশ থেকে নয়নের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। এরপর নিহতের পিতা শফিয়ার রহমান বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। আসমিরা হলো শর্শুনাদহ গ্রামের মৃত আমজেদ তরফদারের ছেলে মাহবুর রহমান, আসিরউদ্দিন তরফদারের স্ত্রী খুকুমনি ও মেয়ে রিয়া এবং ইমান আলী বিশ্বাসের ছেলে ইসরাফিল। আদালতের আদেশে নয়নকে হত্যার অভিযোগে থানায় নিয়মিত মামলা রুজু হয়। প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। তদন্ত শেষে দুর্ঘটনাবশত মৃত্যুর অভিযোগে ইসরাফিলকে অভিযুক্ত করে আদলতে চার্জশিট দেন সিআইডি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ মামলার অপর তিন আসামির অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে চার্জশিটে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে চার্জশিটের ওপর নারাজি আবেদন করেন মামলার বাদী নিহতের পিতা শফিয়ার রহমান। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নারাজি আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক পিবিআইকে পুনঃতদন্তের আদেশ দেন। বর্তমানে এ মামলার তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক শফিউর রহমান। তিনি বলেন, এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর মামলার নথি পর্যালোচনা করেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও মামলার বাদীসহ স্থানীয়দের বক্তব্য শুনেছি। প্রাথমিক তদন্তে ভিকটিম নয়নের মৃত্যু দুর্ঘটনাবশত বলে মনে হয়নি। আসামিদের মধ্যে কাউকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কাদের পরিকল্পনায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।