যশোরে আরো দুই পুলিশ কর্মকর্তার করোনা শনাক্ত, উপসর্গে মৃত্যু দুই জনের

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরে গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তদের মধ্যে দুইজন পুলিশ অফিসার রযেছেন। আরো আছেন একজন চিকিৎসকসহ ১২। এছাড়া একই দিন যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। যশোরের সিভিল সার্জন দফতর সূত্রে জানা গেছে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার পাওয়া রিপোর্টে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তার শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে। তারা হলেন, কেশবপুর থানার এএসআই মো. তরিকুল ইসলাম (৪১) এবং ঝিকরগাছা থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম (৪১)। এর আগে গত ১৩ জুন বেনাপোল ইমিগ্রেশনের দুই এসআই করোনা পজেটিভ বলা হয়েছিল। এর আগে বেনাপোলে কর্মরত আরেক পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সবমিলিয়ে এই জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হলেন।
এছাড়া মিনহাজুর রহমান (৫৯) নামে এক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকরিরত। বসবাস করেন যশোর শহরের পোস্ট অফিসপাড়ায়। এছাড়া যশোরের অভয়নগর উপজেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক নওয়াপাড়া পত্রিকার ম্যানেজার বেলাল হোসেনের (৫২) করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্য যারা আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন, শার্শার বাগআঁচড়া এলাকার এক ব্যবসায়ী (৫০), বেনাপোল কলেজপাড়ার এক ব্যবসায়ী (৬০), একই এলাকার ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ী, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩৮ বছর বয়সী এক নারী পরিচ্ছন্নতা কর্মী, অভয়নগর উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের ৬৪ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ী, একই এলাকার বাসিন্দা ও আফিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক (৪৮), শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার বাসিন্দা যশোর জিলা স্কুল হেলথ সেন্টারের ফার্মাসিস্ট এক নারী (৪৮), যশোর শহরতলীর বাহাদুরপুর এলাকার ৬২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি, কেশবপুরের বাসিন্দা ওরিয়ন ফার্মার এক কর্মী (৩৮) এবং একই উপজেলার ত্রিমোহিনী এলাকার এক গৃহিণী (২৭)।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, শনাক্ত ব্যক্তিদের নিজ নিজ বাড়িতে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের বাড়িগুলোও লকডাউন করেছে স্ব-স্ব এলাকার প্রশাসন। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে বৃহস্পতিবার দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুই রোগীর নাম সাদু বিশ্বাস (৩০) ও আশরাফ আলী বিশ্বাস (৫০)। সাদু বিশ্বাস যশোর শহরতলির নওদাগ্রামের কাইউম বিশ্বাসের আর আশরাফ আলী ঝুমঝুমপুরের মৃত কিসমত আলীর ছেলে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহম্মেদ বলেন, সাদু বিশ্বাস বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তির একঘণ্টার মাথায় তার মৃত্যু হয়। আশরাফ আলী করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সকাল সাতটা ২০ মিনিটে। তার মৃত্যু হয় দুপুর দুইটা ৪০ মিনিটে। তিনি আরও জানান, মৃত দুইজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যেহেতু করোনা উপসর্গ নিয়ে তারা মারা গেছেন, একারণে স্বল্প সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দাফন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।