যশোরের সন্ত্রাসী ট্যাবলেট সোহেলকে তুলে নিয়ে যাবার অভিযোগ স্বজনদের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের আলোচিত সন্ত্রাসী এক ডজন মামলার আসামি ট্যাবলেট সোহেলকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। অভয়নগর উপজেলার পচা মাগুরা গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৯ দিন আগে এই সন্ত্রাসীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সংস্থা অবশ্য তাকে আটকের কথা স্বীকার করেনি। গত ৩ জুন দিনদুপুরে বেজপাড়া টিবি কিনিক এলাকার একটি ছাত্রাবাসে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী ট্যাবলেট সোহেল জড়িত ছিলো বলে প্রচার রয়েছে।
সোহেল ওরফে ট্যাবলেট সোহেল যশোর শহরের বেজপাড়া টিবি কিনিক এলাকার মানিক মুন্সীর ছেলে। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী ট্যাবলেট সোহেলের দুটি স্ত্রী। অভয়নগরে তার প্রথম স্ত্রীর পিতার বাড়ি। সেখান থেকে তাকে কে কা কারা তুলে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
সোহেলের মা আয়েশা খাতুন জানান, অভয়নগর উপজেলার পচা মাগুরা গ্রামে তার ছেলের শ্বশুরবাড়ি। শ্বশুরের নাম আসাদ এবং ছেলের স্ত্রীর নাম রমেছা বেগম। গত ৬ জুন শনিবার গভীর রাতে ছাই রঙের একটি মাইক্রোবাসে কতিপয় ব্যক্তি সেখানে যান। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তার ছেলেকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছেন। সেই থেকে তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল রোববার সকালে তার ছেলের স্ত্রী রমেছা বেগম এ বিষয়ে অভয়নগর থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু থানা পুলিশ তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। তিনি আরও জানান, রোববার খবর পান নড়াইলে একটি লাশ পাওয়া গেছে। এ খবর পেয়ে তিনি নড়াইলের হাসপাতাল মর্গেও ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তার ছেলের লাশ মেলেনি।
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানা পুলিশের ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, ট্যাবলেট সোহেল নিখোঁজ সংক্রান্ত ঘটনায় কেউ তাদের থানায় অভিযোগ করতে আসেননি। তবে এই নামের একজন মাদক ব্যবসায়ী মাঝে মধ্যে যশোর থেকে মোটরসাইকেলে প্রেমবাগে মাদকদ্রব্য বিক্রি করতে আসে বলে তারা জানতে পেরেছেন। তাকে ধরতে ইতিপূর্বে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু তারা তাকে ধরতে পারেননি। ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মদ জানান, তারা ট্যাবলেট সোহেল নামে কাউকে আটক করেননি। একই কথা বলেছেন কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুন দিনদুপুরে যশোর শহরের বেজপাড়া টিবি কিনিক এলাকার একটি ছাত্রাবাসে ডাকাতি হয়। ৭/৮ জনের একদল দুর্বৃত্ত ছাত্রাবাসের বাসিন্দা এম এম কলেজের ছাত্র অমিত সমাদ্দারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি অ্যাপাচি মোটরসাইকেল, ম্যানিব্যাগ ও দুটি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায়। এই ডাকাতির ঘটনার সাথে সন্ত্রাসী ট্যাবলেট সোহেল জড়িত বলে প্রচার রয়েছে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক ছিলো। পুলিশও তাকে খুঁজছিলো। অপরদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী ট্যাবলেট সোহেলের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাসহ এক ডজন মামলা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একটি সূত্র জানায়, যশোর পৌরসভার একজন জনপ্রতিনিধি সন্ত্রাসী ট্যাবলেট সোহেলের আশ্রয়দাতা। কয়েক বছর আগে সে পুলিশের হাতে আটক হলে ওই জনপ্রতিনিধি তাকে ছাড়াতে তদবিরও করেছিলেন। এ সময় পুলিশকে মোটা অঙ্কের টাকা দেয়া হয়েছিলো বলে গুঞ্জন রয়েছে।