ইফার বিতরণ প্রক্রিয়া নিয়ে ইমামদের প্রশ্ন : প্রধানমন্ত্রীর অনুদান ইমাম-মুয়াজ্জিন নাকি মসজিদের উন্নয়নের জন্যে ?

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদান বিতরণ প্রক্রিয়ায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যশোর জেলা ইমাম পরিষদ। শনিবার ইমাম পরিষদ যশোরের সভাপতি মওলানা আনোয়ারুল করিম যশোরী এবং সেক্রেটারি মাওলানা বিলায়েত হোসেন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই নাজুক ও কঠিন মহূর্তে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়েকেরামদের পরামর্শ সাপেক্ষে মসজিদের ৫ ওয়াক্ত নামাজের জামাত, রমজানের তারাবি, জুম্মা ও ঈদের নামাজসহ ধর্মীয় উল্লেখযোগ্য বিষয়াদি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে সমাধা করে চলেছেন। ইমামগণ এ সিদ্ধান্ত ও ঘোষণা মুসল্লিদের সাথে নিয়ে বাস্তবায়নে সচেষ্ট। সে ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক হয়ে দেশের সকল মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থিক অনুদানের জন্যে বিশাল অংকের টাকা বরাদ্দ দিলেন। কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ মহাপরিচালক কর্তৃক গত ২০ মে ২০২০ তারিখে জেলা প্রশাসক এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় ও জেলার পরিচালক/উপ-পরিচালক বরাবর প্রেরিত চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ব্যাখ্যা না দিয়ে মসজিদের অনুকূলে অনুদান বিতরণ করে ১৫ জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন প্রেরণের অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠিতে অনুকূল শব্দ থাকায় এই টাকাটা কোন জায়গায় মসজিদ ফান্ডে নিয়েছে এবং কোন কোন জায়গায় ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাঝে ৫০০০/- টাকা হারে বিতরণ করা হয়েছে। যশোরে অভয়নগর থানা এবং বাঘারপাড়া থানা ছাড়া সদর থানার ইছালি ইউনিয়ন, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন এবং নওয়াপাড়া ইউনিয়ন-এর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা অনুযায়ী ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাঝে ৫০০০/- টাকা হারে বিতরণ করা হয়েছে। মহা-পরিচালকের চিঠিতে উল্লেখিত মসজিদের অনুকূল শব্দের পরিবর্তে ইসলামিক ফাউন্ডেশন যশোর এর উপ-পরিচালক মসজিদের উন্নয়ন শব্দ স্থাপন করায় বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়নে এবং মসজিদের আরও বেশি বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। অথচ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহা-পরিচালকের চিঠিতে কোথাও উন্নয়ন শব্দ উল্লেখ নেই। ইসলামিক ফাউন্ডেশন যশোর-এর ডিডি একটু অগ্রসর হয়ে মসজিদের অনুকূলে শব্দের পরিবর্তে মসজিদের উন্নয়ন খাতে টাকাটা ব্যয় করতে হবে মর্মে স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক গ্রামের কাগজে বিবৃতি দিয়েছেন। তাছাড়া মসজিদের তালিকা প্রদানে বিশাল গড়মিল পাওয়া যায়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদের তালিকায় পৌরসভার মসজিদের সংখ্যা ১০৫টি অথচ, জেলা ইমাম পরিষদের মসজিদের তালিকায় পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মসজিদ সংখ্যা ১৬৬টি। সদরের ইউনিয়নের মসজিদের সংখ্যাও প্রায় ৩ ভাগের ১ ভাগ মসজিদ বাদ পড়েছে। সেহেতু ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এই অনুদানের টাকা বন্টন প্রক্রিয়ায় জনমনে যথেষ্ট বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত টাকা ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। সে অনুযায়ী বিতরণ হচ্ছে। অনেকেই বুঝেছে ফাউন্ডেশনের চিঠিতে উন্নয়ন শব্দ উল্লেখ রয়েছে। সেক্ষেত্রে অনেকে মসজিদের উন্নয়ন খাতে এই টাকাটা নেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে। সুতরাং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী বরাদ্দকৃত এই টাকাটা বিতরণে পরিস্কার বক্তব্য থাকা উচিত। তাহলে মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন ও কমিটির মাঝে সম্পর্ক সুদৃঢ় থাকবে, দূরত্ব সৃষ্টি হবে না এবং প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত টাকাটা যথাযথ স্থানে পৌছাবে।