করোনা প্রতিরোধে পোলিও টিকায় সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনা প্রতিরোধে পোলিও টিকা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করছেন গবেষকরা। সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বাল্টিমোর ভিত্তিক গ্লোবাল ভাইরাস নেটওয়ার্ক নামক আন্তর্জাতিক জোটের বিশেষজ্ঞরা এমন আশাবাদ জানিয়েছেন। এ পূর্বানুমান পরীক্ষার জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর অনুমতি ও তহবিল চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন তারা।
বিভিন্ন দেশে করোনা প্রতিরোধী টিকা ও ওষুধ আবিষ্কারের প্রচেষ্টা চলছে। বিশেষজ্ঞরা আভাস দিয়েছেন, নিরাপদ ও কার্যকর রোগ প্রতিরোধী টিকা উদ্ভাবনে ১২-১৮ মাস সময় লাগতে পারে। এ পর্যন্ত মাত্র কয়েকটি টিকা পরীক্ষামূলকভাবে মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়েছে। এরমধ্যে একদল বিশেষজ্ঞ আশা প্রকাশ করেছেন, বিদ্যমান পোলিও টিকা দিয়ে করোনাভাইরাস সাময়িকভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধে বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন নিরাপদ, এটি প্রয়োগ করা সহজ এবং খুব সহজলভ্য। প্রতি বছর ১০০ কোটিরও বেশি পোলিও টিকা উৎপাদিত হয়। ১৪০টিরও বেশি দেশে এ টিকা প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। বিশ্ব থেকে পোলিও প্রায় নির্মূল করতে পেরেছে এ টিকা। পোলিও ভাইরাসের দুর্বলতম সংস্করণ ব্যবহার করে ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। ক্ষুদ্র এই ভ্যাকসিন শরীরে শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। বিশেষজ্ঞদের আশা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সাময়িক সুরক্ষা দিতে পারবে এ ভ্যাকসিন। নিবন্ধে তারা লিখেছেন, কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করার জন্য ওরাল পোলিও ভাইরাস ভ্যাকসিন ব্যবহারের প্রস্তাব দিচ্ছি আমরা। পোলিওভাইরাস ও করোনাভাইরাস-দুটোই আরএনএ ভাইরাস গোত্রের। সাধারণ সহজাত প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে এগুলোকে ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হতে পারে।
এফডিএর ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ কনস্ট্যান্টিন চুমাকোভ এবং ইউনিভার্সিটি অফ ম্যারিল্যান্ডের ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান ভাইরোলজির অধ্যাপক রবার্ট গ্যালো বলেছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি কাজ করবে কিনা তা জানতে অন্তত একটি পরীক্ষা চালানোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। নিবন্ধটিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে এ দুই বিশেষজ্ঞও রয়েছেন। ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন হার্ড ইফেক্ট তৈরি করে। মোট জনসংখ্যার ৭০-৯০ শতাংশ যখন একটি সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে তখনই হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়। সংক্রমণের পর সুস্থ হয়ে গিয়ে কিংবা ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে এ ইমিউনিটি তৈরি করা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের শরীরে পোলিও ভ্যাকসিন প্রয়োগে ঝুঁকির সম্ভাবনা একেবারে কম। এটি পোলিও ধাঁচের জটিলতা তৈরি করতে পারে, তবে তা ৩০ লাখে একজনের ক্ষেত্রে ঘটতে পারে।