মোংলায় পিতার মরদেহ দাফন করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ৫ মেয়ে আহত

0

মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা ॥ বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন অসহায় একটি পরিবারের ৫ মেয়ে। মৃত বাবার লাশ ঘর থেকে বের করে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় এ হামলার শিকার হতে হয়েছে তাদের। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার উত্তর চাঁদপাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত পুলিশের সহায়তায় লাশ দাফন করতে পারলেও সন্ত্রাসীদের জীবননাশের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় সময় পার করছে পরিবারটি। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। মোংলা থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
থানায় দেয়া অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহিদুল ও তার লোকদের সাথে ঝর্ণা বেগমদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টায় বার্ধক্যজনিত কারণে গৃহকর্তা আশ্রাব আলী শেখ মারা যান। দাফনের জন্য যে পথ দিয়ে লাশের কফিন বের করার চেষ্টা করা হয় ওই পথ দিয়ে লাশ বের করতে প্রতিবেশী প্রতিপক্ষ শহিদুল শেখ, বাবুল শেখ, এশার শেখ, শাহিন শেখ, হাসমত শেখ, মহিদুল শেখ, বাবুল সরদার, বেল্লাল সরদার, ওয়াসিম ও এমরানসহ ১০/১৫ জন বাধা প্রদান করে। এ সময় লাশ দাফনের জন্য কবরস্থানে নেয়ার চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষ শহিদুলসহ অন্যান্যরা মৃতের মেয়েদের বেধড়ক মারপিট এবং লাশের খাটিয়া ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে স্বজনদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় এলাকাবাসী ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশের সহায়তায় লাশ দাফনসহ আহতদের মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া আহত কোহিনুর বেগম জানান, আমাদের কোনো ভাই নেই, বাবার শেষ ইচ্ছা ছিলো তার মরদেহটি যেন বাড়ির পূর্ব পুরুষের রা¯াÍ দিয়ে বের করা হয়। কিন্ত সন্ত্রাসী শহিদুলসহ তার দলবলের কারণে বাবাকে শেষবারের মতো দেখতেও পারলাম না। মা হারা অসহায় আমরা পাঁচ বোন দীর্ঘ ৪ বছর এদের নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসী শহিদুল ও তার দলবলের ভয়ে আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। অভিযুক্ত শহিদুল জানান, প্রতিবেশীরা লাশ নিয়ে জমি দখলের উদ্দেশ্যে রাজনীতি করছে। এ ঘটনায় জিবু বেগম বাদী হয়ে ১১ জনসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনকে আসামি করে মোংলা থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। এ ব্যাপারে মোংলা থানার ওসি মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, উত্তর চাঁদপাই গ্রামে লাশ দাফন নিয়ে যা ঘটেছে তা সত্যিই হৃদয় বিদারক। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করে। হামলার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।