দেশে করোনার দ্রুত বিস্তারের ২ কারণ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দেশে করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) প্রথম সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হবার তিন মাস পুরো হয়েছে ৮ জুন। দেশে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬৮ হাজার ৫০৪ জন। মারা গেছেন ৯৩০ জন। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাাৎকারে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, সংক্রমণ বাড়ার এই ধারা লম্বা সময় ধরে চলতে পারে। কবে থেকে তা কমতে শুরু করবে তা এখনো তারা বলতে পারছেন না। দেশে সংক্রমণের হার এবং মৃত্যু- দু’টিই বাড়ছে বলে বলে জানান বিশ্লেষকরা।
করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সরকারের একটি কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেছেন, ঢিলেঢালা লকডাউন, ঈদকে কেন্দ্র করে লাখ লাখ মানুষের গ্রামে যাওয়া এবং শহরে ফিরে আসা- এসবের প্রভাবে সংক্রমণ এখন বেড়ে চলেছে। তিনি বলেন, ‘মে মাসে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণের হার দ্রুত বেড়ে গেছে। এর কারণ হলো- জনগণের বিশাল একটা অংশ লকডাউন মানেনি।’ ‘আবার ঈদ আসলো, তখন ল ল মানুষ গ্রামে গেলো। গ্রামে কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ ছিল না। মানুষ গ্রামে গিয়ে তা ছড়ালো। আবার এই লোকগুলো শহরে ফেরত এলেন। এর ফলে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কিন্তু বেড়ে গেছে। আমরা এখন পিক লেভেলে আছি বলে মনে হচ্ছে’ যোগ করেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রথম সংক্রমণের দেশ চীনে তিন মাসের মধ্যেই সংক্রমণ কমতে শুরু করেছিল। দণি কোরিয়াতেও নীচের দিকে নামতে শুরু করে সংক্রমণের হার। কিন্তু তিন মাস পর বাংলাদেশে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মুনশি বলেছেন, এখন সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা কঠিন। তিনি বলেন, ‘এই তিন মাসে এখন যদি আমরা ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের চিত্র দেখি, এই তিনটি দেশেই কিন্তু সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু অন্যান্য দেশগুলো যেমন ইউরোপে কিন্তু এখন সংক্রমণের মাত্রা নীচের দিকে চলে এসেছে। সেখানে তা তিন মাসের মধ্যেই সম্ভব হয়েছে।’ ‘কিন্তু আমাদের সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী। এই অবস্থাটা কিন্তু অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বিপরীত’ যোগ করেন তিনি।
অধ্যাপক সাইফুল্লাহ আরও বলেছেন, ‘এ কথা বলা যায় যে, যতদিন পর্যন্ত আমাদের একটা বড় জনগোষ্ঠী আক্রান্ত না হবে অথবা টিকা না আসবে, ততদিন পর্যন্ত এই সংক্রমণ আমাদের দেশে থাকবে।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘এখন পৃথিবীতে ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত আসলে এটা কোন দিকে মোড় নেবে, তা বলা কঠিন।’