আজ শুরু হচ্ছে বাজেট অধিবেশন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ আজ বুধবার শুরু হচ্ছে চলতি সংসদের দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশন। বিকাল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। অধিবেশনকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করা হয়েছে। প্রবীণ ও অসুস্থ এমপিদের অধিবেশনে না আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সরকারদলীয় প্রধান হুইপ নূর-এ আলম চৌধুরী জানান, করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি থাকলেও তা মোকাবিলার জন্য কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। বাজেট অধিবেশন থেকে যাতে নতুন কেউ সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রবীণ ও অসুস্থ এমপিদের অধিবেশনে না আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এদিকে করোনা সতর্কতার অংশ হিসেবে সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করার কথা জানানো হয়েছে।
প্রথম দিনে অধ্যাদেশ উত্থাপন ও শোক প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শেষ হবে। রেওয়াজ অনুযায়ী চলতি সংসদের সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শেষে অধিবেশন মুলতবি করা হবে। পরদিন ১১ই জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর মাত্র ৫দিন আলোচনা হবে। আর পুরো বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় ব্যয় হবে ১০ দিন। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা বাজেট আলোচনা হতে পারে। গত বছর প্রায় ৬০ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছিলো। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এই আলোচনা চলবে। আগামী ২৯শে জুন অর্থবিল ও ৩০শে জুন মূল বাজেট পাস হবে। মাত্র ১২ কার্যদিবসে আগামী ৯ই জুলাই শেষ হতে পারে দেশের ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম বাজেট অধিবেশন। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারো অধিবেশনের আগে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হচ্ছে না। এর আগে সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে গত ১৮ই এপ্রিল একদিনের জন্য বসা সংসদের সপ্তম অধিবেশনের আগেও কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়নি। আর সংসদ অধিবেশনে উপস্থিতি ৯০ জনের মধ্যে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদিকে অধিবেশনকে সামনে রেখে কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। প্রতিবছরই বাজেট উত্থাপনের দিন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকগণ, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকলেও এবার কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার স্থগিত করা হয়েছে। তাছাড়া অধিবেশন পরিচালনার জন্য সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসাও সীমিত করা হয়েছে। শুধু যাদের প্রয়োজন হবে তারাই আসবেন। আর তাদের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত হয়ে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সংসদে আসন বিন্যাসেও পরিবর্তন এসেছে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশের বেশ কয়েকটি আসন ফাঁকা রাখা হবে। তারই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ঠিক পেছনের আসনে বসা সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীকে এক সারি পেছনে বসতে হবে। অন্যদের আসনও ফাঁকা রেখে বিন্যাস করা হয়েছে। সংসদে যোগদানকারী সংসদ সদস্যদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। প্রত্যেকের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া টানেলের ভেতরে স্থাপন করা জীবাণু মুক্তকরণ চেম্বারের ভেতর দিয়ে সকলকে প্রবেশ করতে হবে। ওদিকে ইতিমধ্যে ৮ জন সংসদ সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সংসদ সদস্যদের মধ্যে সর্বশেষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায়। নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ আসায় গত সোমবার রাতে তাকে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে করোনা পজেটিভ আসায় হেলিকপ্টারে বান্দরবান থেকে ঢাকায় এনে সিএমএইচে ভর্তি করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রামস্থ বান্দরবান আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংকে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। তিনি পহেলা জুন নিউমোনিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে, প্রথম করোনা আক্রান্ত সংসদ সদস্য নওগাঁ-২ আসনের মো. শহীদুজ্জামান সরকার ইতিমধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। এ ছাড়াও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের এবাদুল করিম বুলবুল, চট্টগ্রাম-৬ আসনের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, জামালপুর-২ আসনের ফরিদুল হক খান দুলাল ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালি) আসনের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।