বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দুর্নীতি সহায়ক: টিআইবি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ আসন্ন জাতীয় বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুবিধা আরও বিস্তৃত করা হচ্ছে দাবি করে সরকারকে এ জাতীয় দুর্নীতি সহায়ক ও স্ববিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে কার্যকর দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের রোডম্যাপের ঘোষণা এবং এর বাস্তবায়ন দেখতে চায় সংস্থাটি। মঙ্গলবার(৯ জুন) টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের নামে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে আরও বিস্তৃত করার খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আসন্ন বাজেটে বড় পরিসরে আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগই কেবল দেওয়া হচ্ছে না, বরং অর্থের উৎস নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রশ্ন করার বিধানটিও উঠিয়ে দিতে যাচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। যা কোনওভাবেই কাম্য হতে পারে না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ‘শূন্য সহনশীলতার’ ঘোষণা আর দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদকে বৈধতা দেওয়া শুধু পরস্পর বিরোধী নয়, বরং সরাসরি দুর্নীতি সহায়ক, অনৈতিক, অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক। বছরের পর বছর এই সুবিধা দিয়ে দেশের অর্থনীতির কোনও উপকার হয়নি, উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আদায় হয়নি, কোনও বিনিয়োগ তো নয়-ই। অথচ অনৈতিকতা প্রশ্রয় পেয়েছে আর সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।’
পাশাপাশি বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া লক্ষাধিক কোটি টাকার যে খতিয়ান দেশি-বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের অনুসন্ধানে বিভিন্ন সময়ে বেরিয়ে এসেছে, তা দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানায় টিআইবি।
স্বাস্থ্য খাতের ভঙ্গুর পরিস্থিতি একদিনে তৈরি হয়নি উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বছরের পর বছর স্বাস্থ্য খাতে অপর্যাপ্ত অর্থায়ন (যা বিব্রতকরভাবে জিডিপির এক শতাংশেরও কম), বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সমন্বিত কৌশলের অভাব আর এ খাতে ক্রমবর্ধমান লাগামহীন দুর্নীতি এহেন বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। যেখানে ক্রয় ও অবকাঠামো খাতের বরাদ্দকে স্বার্থান্বেষী মহল যোগসাজশ করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ বিকাশে এতোটাই তৎপর থেকেছে যে স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও সেবার মান বাড়ানোর বিষয়টি নিতান্তই উপেক্ষিত ছিল বলা যায়।’
করোনার সংক্রমণের কারণে অর্থনৈতিকভাবে অসহায় মানুষের কর্মসংস্থানের গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্র মানুষের জন্য নির্ধারিত সহায়তা আত্মসাতে তৎপর স্বার্থান্বেষী মহলকে নিয়ন্ত্রণের কার্যকর কর্মকৌশল নেওয়া আবশ্যক, যার ঘোষণাটি আসতে হবে আসন্ন বাজেটেই। এক্ষেত্রে শুধু বরাদ্দ বাড়ানোই নয়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্তির যোগ্য সকল উপকারভোগীর কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলে নিয়মিত হালনাগাদ অবস্থায় ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সহজে অভিগম্য মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে এবং প্রযুক্তির কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতির সুযোগ কমিয়ে আনায় গুরুত্ব দিতে হবে।’