আগামী বাজেটে অপ্রত্যাশিত খাতে বরাদ্দ বাড়ছে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনা এবং বাজেট পরবর্তী অপ্রত্যাশিত ঘটনা মোকাবিলার জন্য আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে ‘অপ্রত্যাশিত খাত’ এ ৫০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা ছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ২ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এ খাতে একই পরিমাণ বরাদ্দ রাখা হলেও ব্যয় হয়েছে মাত্র ২৯ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একই পরিমাণ বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় হয় মাত্র ৬০ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এ খাতে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় হয়েছে মাত্র ২ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের বাজেট সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নানা দুর্যোগপ্রবণ আমাদের দেশ। তাই অপ্রত্যাশিত কোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় প্রতি বছরই এ খাতে দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এছাড়া, রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে হঠাৎ টাকার প্রয়োজন হলেও এ খাত থেকে অর্থের যোগান দেওয়া হয়। যেমন গত বছর রোজ গার্ডেন কেনার জন‌্য এ খাত থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আগামী অর্থবছরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় হঠাৎ করে যদি কোনো অর্থের প্রয়োজন হয় সেজন্য এবার এ খাতে বরাদ্দ ৫০০ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হবে।’ জানা গেছে, ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত’ নামে পরিচিত এ খাত থেকে গত কয়েক অর্থবছরে তেমন অর্থ ব্যয় না হলেও চলতি অর্থবছরে এ খাতের প্রায় পুরো অর্থই ব্যয় হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বেশিরভাগই গেছে করোনার কারণে দেওয়া স্বাস্থ্য ও প্রণোদনা খাতে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত ছয় অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দের বিপরীতে খরচ প্রায় নেই বললেই চলে। তবে ব্যতিক্রম শুধু গত ২০১৮-২০১৯ ও চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছর। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা’ খাতে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। বরাদ্দের বিপরীতে খরচ হয়েছে প্রায় সব টাকা। সেই অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি টাকা গেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতায় কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত অনিষ্পন্ন আবেদনগুলো নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সম্ভাব্য ৭৫৭ কোটি টাকার মধ্যে অতিরিক্ত ৫০০ কোটি টাকা এ খাত থেকে ছাড় করা হয়। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এ খাতে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। করোনার কারণে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা বাবদ সুদ ব্যয় এবং দরিদ্র পরিবারকে নগদ অর্থের পাশাপাশি ভর্তুকি দিয়ে ওএমএসের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রিতে সরকারের খরচ হয় প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। এ অর্থও অপ্রত্যাশিত খাত থেকে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সরকারি চাকরিজীবীদের মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ বাবদ যে অর্থ দেওয়া হবে তা-ও এ খাত থেকেই যাবে। বছর শেষে পুরো টাকাই ব্যয় হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।