যশোরে আইনজীবীর জালিয়াতি ধরলেন বিচারক, ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ সমিতিকে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে সৈয়দ কবীর হোসেন জনি নামে একজন আইনজীবীর জালিয়াতি ধরার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা আইনজীবী সমিতিকে নির্দেশ দিয়েছেন একজন বিচারক। গতকাল রোববার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আকরাম হোসেন এ নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে সৈয়দ কবীর হোসেনকে কারণ দর্শাও নোটিশ দিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এম এ গফুর।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অ্যাড. সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একজন বাদীর পক্ষে আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেন। পরে আদালতের ওই পিটিশনটি কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। এ মামলার জিআর নং-২৪৪/২০। পুলিশ এ মামলায় ৩ আসামিকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। আসামিরা হচ্ছেন, ফয়েজ ইসলাম ইভান, মুক্তা ইসলাম ও উম্মে আসমা তন্দ্রা। সূত্র জানায়, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী। কিন্তু তিনি বিষয়টি গোপন করে আসামি পক্ষের হয়ে কাজ করতে থাকেন। গত ৩ জুন ভার্চুয়াল আদালতে উল্লিখিত ৩ আসামির জামিন শুনানি হয়। এ সময় সৈয়দ কবীর হোসেন জনি আসামিদের জামিনের জন্য বাদী ও বিবাদীদের মধ্যে মীমাংসা হয়েছে মর্মে একটি জাল এফিডেফিট আদালতে উপস্থাপন করেন। এফিডেফিটে মামলার বাদী ইয়াসিন আরাফাত বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরে আদালত প্রমাণ পান ওই মামলার বাদী ইয়াসিন আরাফাত নন, উম্মে সালমা শিখা।
সূত্র আরও জানায়, জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ার পর সংশ্লিষ্ট বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আকরাম হোসেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিতভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশে আদালত বলেছেন, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি মামলার এজাহারকারীর পে নিয়োজিত আইনজীবী হওয়া সত্বেও আসামি পরে সাথে যোগসাজসে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। যা প্রমাণিত হয়েছে। আদালত আরও বলেছেন, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি আসামি পরে আইনজীবী নন। তাছাড়া ভার্চুয়াল আদালতে শুনানি না করে তিনি স্ব-শরীরে বিচারকের খাসকামরার দরজায় দাঁড়িয়ে জামিনের জন্য পিড়াপিড়িও করেন। এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর জানান, অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আকরাম হোসেনের আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর সৈয়দ কবীর হোসেন জনিকে শোকজ করা হয়েছে। তাকে তিনদিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, রোববার এক মহিলাও তার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তধীন। এ বিষয়ে সৈয়দ কবীর হোসেন জনি দাবি করেন, তিনি কোনো জালিয়াতি করেননি। ভূলবশত এ ঘটনা ঘটেছে।