অবরুদ্ধ বিশ্বে নেই ঈদ আনন্দ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে এই খুশি-আনন্দ নেই কারো মনে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপের আকাশে শনিবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলেও ঈদ উদযাপনে ভাঁটা পড়েছে। রোববার ঈদ পালন করেছে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের মুসলিমরা। কিন্তু সেই চিরচেনা আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি কোথাও। বিশ্বজুড়ে ভয়াল থাবা বসিয়েছে করোনাভাইরাস। জুবুথুব হয়ে আছে ঘরবন্দি মানুষ। তুরস্ক, কাতার ও ইন্দোনেশিয়ার মতো অধিকাংশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে নামাজসহ ঈদ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ। সৌদি আরবের মসজিদ কর্তৃপক্ষ মুসলিমদের ঈদের নামাজ ঘরে পরতে বলেছে, যেমনটা ছিল রমজানজুড়ে। আর উত্তর ও লাতিন আমেরিকার সংখ্যালঘু মসলিম দেশের মুসলমানরাও লকডাউনের মধ্যে সীমিত আকারে ঈদ উদযাপন করেছে।
স্যান্টিয়াগোর চিলি ইসলামিক সেন্টারের ফুয়াদ মুসা আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘এই বছরের ঈদ উদযাপন হচ্ছে বিষণ্নতায়।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘দীর্ঘ এক মাস রমজানের পর ঈদের আনন্দ, কিন্তু সবকিছু অদ্ভুত লাগছে। কারণ আগের বছরগুলোতে আমরা সবাই কত আনন্দ উৎসব করেছে।’ ঈদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবার প্রযুক্তির মতো বিকল্প পথ বেছে নিয়েছে মুসলমানরা। ভার্চুয়াল ধর্মীয় বক্তৃতা, সামাজিক মিডিয়ায় উদযাপন ও অনলাইন কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। মুসা যেই ইসলামিক সেন্‌টারে কাজ করেন, সেখানে শত বছর ধরে ধর্মীয় বক্তৃতার জন্য মধ্যপ্রাচ্য থেকে মুসলিম স্কলারদের আমন্ত্রণ করার চল রয়েছে। কিন্তু ভ্রমণে কড়াকড়ির জন্য এবার তারা ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা করেছে।
যুক্তরাজ্যে রমজান ট্রেন্ট প্রজেক্ট নামে একটি সংগঠনের গণমাধ্যম প্রধান রহমাহ আহমেদ বলেছেন, ‘আমাদের এবারের ঈদ উদযাপন হবে গল্প বলা ও ক্র্যাফট তৈরির মতো শিশুদের কার্যক্রম দিয়ে। অনলাইনে আরো অনেক কিছুই হবে।’ মার্কিন মানবাধিকার সংগঠন দ্য কাউন্সিল অব আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসও আমেরিকান মুসলিমদের ঈদ উদযাপনে অনলাইন উপকরণের ব্যবস্থা করেছে। প্রতিষ্ঠানের সহকারী নির্বাহী পরিচালক এডওয়ার্ড মিচেল বললেন, ‘শারীরিকভাবে না পারলেও আমরা মানুষকে ঈদ উদযাপনে উৎসাহিত করতে চাই। ছবি তোলা, ইতিবাচক কোনো কথা বলা এবং ভালো কোনো গল্প বলে এই অস্বাভাবিক ঈদটা উদযাপন করা হবে।’ সংযুক্ত আরব আমিরাত রাজধানী আবুধাবিতে ২৩ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অনলাইন কনসার্টের আয়োজন করেছে সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগ। এদিকে মিসর ও ইরানে ঈদের পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ কঠোর। মিসরে কারফিউ বাড়িয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ঈদের প্রথম থেকে ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত চলবে না কোনো গাড়ি। ইরানে করোনার বিস্তার রোধে ঈদের সময়েও মানুষের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।