সাতক্ষীরা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডব, ১ জনের মৃত্যু

0

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি॥ ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে সাতক্ষীরা শহরের কামাননগর এলাকায় গাছ চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মাপুকুর, গবুরা ও আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া নদীর ভেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।  সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চাউলখোলা এলাকায়। সেখানকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০০ ফুটের মত এলাকা ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।
এছাড়া কামালকাটি ও চন্ডিপুর এলাকাতেও লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এছাড়া গাবুরা ইউনিয়নের জেলেখানি ও নাপিতখালী এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রকাটি,কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, হিজলা, দিঘলাররাইট, কোলা ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে বলে নিশ্চিত করেছেন আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা। এদিকে সাতক্ষীরা শহর, পাটকেলঘাটা, তালা ও কলারোয়ায় গাছ গাছালি ভেঙে ও কাঁচা ঘরবাড়ি ও টিনের চাল উড়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার গতিবেগে বিকাল ৪টার দিকে সুন্দরবন উপকুলে সাইক্লোন আম্ফান আছড়ে পড়ে। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে আম্ফানের গতিবেগ বৃদ্বি পেয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১৪৮ কিলোমিটার গতিবেগে পূর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে ঝড়ো হাওয়াটি প্রবাহিত হতে থাকে। এদিকে, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজর গিফারি জানিয়েছেন, আম্ফানের কারণে নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল জোয়ারে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের দাঁতনেখালি, দূর্গাবাটি, পদ্মপুকুর ও গাবুরার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও ওপর দিয়ে পানি লোকলয়ে ঢুকছে। এ এলাকায় কাঁচা ও টিনের ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ-গাছালি উপড়ে রাস্তা-ঘাট ও বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, ১৪৭টি সাইক্লোন শেল্টার ও ১৬শ ’ ৯৮টি স্কুল কলেজসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ ৭০ হাজার ১৫০জন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি ১০৩ জনের মেডিকেল টিম স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি উপকূল এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড নিয়োজিত রয়েছে।