দ্বিগুনের বেশি ভাড়ায় ফিরছেন যুক্তরাষ্ট্রে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দরকষাকষিতে কোনো কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে দ্বিগুনেরও বেশি ভাড়া পরিশোধ করে দেশে ফিরছেন করোনার কারণে প্রায় দু’মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা। একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভাড়া করা কাতার এয়ারওয়েজের বিশেষ বিমানে কাল ফিরছেন তারা। ওই ফ্লাইটের একটি সুলভ টিকেটের জন্য প্রত্যেককে গুনতে হচ্ছে পৌনে ২ লাখ টাকা! ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে চলাচলকারী কাতার, কুয়েত, এমিরাটস সাধারণত রিটার্ন টিকেটই ৭০-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকে। কূটনৈতিক সূত্র অবশ্য বলছে, করোনার ওই কঠিন পরিস্থিতিতে স্পেশাল ফ্লাইট আয়োজনে বাড়তি খরচ রয়েছে। ঢাকা থেকে ফেরা আমেরিকানদেরও বাড়তি দামে টিকেট কাটতে হয়েছে। তবে এটা সত্য যে আমেরিকার নাগরিকরা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে লোনসহ নানান সুবিধা পেয়েছেন, যা বাংলাদেশিদের বেলায় অকল্পনীয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এ মোমেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন- বাংলাদেশ সরকারের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত বিশেষ ফ্লাইটটি শুক্রবার রাতে ওয়াশিংটনের অদূরে ডালাস এয়ারপোর্ট থেকে বাংলাদেশিদের নিয়ে যাত্রা করবে।
দোহা হয়ে শনিবার ঢাকায় পৌঁছাবে। খবরে প্রকাশ নিয়মিত ফ্লাইট বন্ধের প্রেক্ষিতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের অনেককে বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করে ডিসকাউন্ট মূল্যে হোটেলে থাকতে হচ্ছে কিংবা তারা (ছাত্র-ছাত্রীরা বিশেষত) সহপাঠীদের বাসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ব্যবসা, প্রশাসনিক কাজ বা জরুরি প্রয়োজনে গিয়ে আটকে পড়াদেরও অর্থকড়ি ফুরিয়ে আসছে। এ অবস্থায় তারা দেশে ফেরার জন্য উদগ্রীব। পররাষ্ট্র মন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন- যাত্রার প্রধানতম শর্ত হচ্ছে- প্রত্যেক যাত্রীর অবশ্যই করোনা-নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে এবং ঢাকায় অবতরণের পর পুনরায় তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিক হয়, তাহলে তাদেরকে নিজ বাসায় ১৪দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হবে। অন্যথায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিনের দু’টি অপশন। এক সরকার নির্ধারিত জায়গা। দ্বিতীয়ত সেল্ফ ফাইনান্স ফাইভ স্টার হোটেল। তুলনামূলক কম ভাড়ায় ওয়েস্টিনসহ কয়েকটি হোটেল ঠিক করা আছে। পছন্দ এবং সুবিধা বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র ফেরতরা তা নিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি এবং নিউ ইয়র্ক ও লস এঞ্জেলেস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর প্রেক্ষিতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি তাদের অবস্থান জানান এবং নিজ খরচে বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরতে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করের। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ন্যূনতম যাত্রী হওয়া স্বাপেক্ষে বিশেষ ফ্লাইট অ্যারেঞ্জের সিদ্ধান্ত দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া ২২০০ ডলার হতে পারে এমন ধারণা দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক অরিক্স এভিয়েশন নামক একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানকে ফ্লাইট চার্টার করার দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই ট্রাভেল এজেন্সি বাংলাদেশে কাতার এয়ারওয়েজ কার্গো বিমানের জিএসএ (সাধারণ বিক্রয় প্রতিনিধি) হিসেবে নিয়োজিত। একই সঙ্গে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের রেজিস্ট্রেশনও শুরু হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রায় আড়াই শতাধিক বাংলাদেশি রেজিস্ট্রেশন করেছেন।